অধীর চৌধুরী। ফাইল চিত্র।
অধীর চৌধুরীকেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে রেখে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে সংগঠনের রোজকার কাজকর্ম দেখভালের জন্য চার থেকে পাঁচ জন কার্যকরী সভাপতি নিয়োগ করা হতে পারে।
রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র অঙ্গ হিসেবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর সাগর থেকে পাহাড় পর্যন্ত রাজ্য কংগ্রেসের পদযাত্রা শুরু হবে। তার আগেই কংগ্রেস হাইকমান্ড এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে চাইছে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত অধীর চৌধুরীর বিকল্প হিসেবে এমন কারও নাম দলের মধ্যে থেকে উঠে আসেনি, যাঁর ব্যাপারে সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতার সম্মতি রয়েছে। তবে ‘টিম অধীর’-এ অধীরের ঘনিষ্ঠ দু’জনের কাজকর্মের পদ্ধতি ও এক্তিয়ারের বাইরে সংগঠনের কাজে নাক গলানো নিয়ে রাজ্যের নেতাদের অনেকেরই ‘অসন্তোষ’ রয়েছে বলে কংগ্রেস হাইকমান্ডের কাছে রিপোর্ট এসেছে। একই সঙ্গে রাজ্যের নেতারা জানিয়েছেন, বাংলা কংগ্রেসে এই মুহূর্তে অধীরের মতো ‘স্ট্রিট ফাইটার’ নেই। কিন্তু লোকসভায় দলনেতা, পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান, বহরমপুরের সংসদীয় কেন্দ্র সামলে তিনি কলকাতায় পুরো সময় সংগঠনের কাজে দিতে পারছেন না।
এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস হাইকমান্ড মনে করছে, অধীরকেই প্রদেশ সভাপতি রেখে চার-পাঁচজনকে কার্যকরী সভাপতি করা যেতে পারে। তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন দায়িত্ব ও এলাকা ভাগ করে দেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে নেপাল মাহাতো, আব্দুস সাত্তার, ঈশা খান চৌধুরীর নাম আলোচনায় রয়েছে। কয়েক জন তরুণ মুখের কথাও ভাবা হচ্ছে।
গত বছর বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস শূন্য হাতে ফেরার পর থেকেই প্রদেশ সভাপতি পদে অধীর চৌধুরীর ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা চলছে। সূত্রের খবর, অধীর নিজেও কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছিলেন, তিনি সরে যেতে তৈরি। এআইসিসি-তে পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত নেতা এ চেল্লা কুমার কলকাতায় গিয়ে রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে বিকল্প নাম নিয়ে কথা বলেন। উদয়পুরে চিন্তন শিবিরে ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি গ্রহণের পরেও অধীরকে সাংগঠনিক বা সংসদীয় কোনও একটি পদ হারাতে হবে বলে জল্পনা বাড়ে। অধীর লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা, পাবলিক অ্যাকাউন্ট কমিটির চেয়ারম্যান পদেও রয়েছেন। কিন্তু কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে, পশ্চিমবঙ্গে শাসক দল তৃণমূল বিরোধীদের কোনও রকম রাজনৈতিক পরিসর ছাড়তে রাজি নয়। সেই পরিস্থিতিতে অধীর লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা, পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির প্রধান পদে থাকলে তাঁর দলীয় কাজেও সুবিধা হবে।
সম্প্রতি পুরুলিয়ার কংগ্রেসের ঝালদা পুরসভা দখল ও তৃণমূলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোকেও কংগ্রেস নিজেদের বড় সাফল্য হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে। রাজ্যে ‘কংগ্রেসের শক্তি’ ও ‘তৃণমূলের বিরুদ্ধে অসন্তোষ’ তুলে ধরতে পুরুলিয়ায় বড় জনসভার আয়োজনের পরিকল্পনা চলছে।