State News

ওঁরা ব্রাত্যই, প্রার্থী হয়ে যান নেতার স্ত্রী

বহরমপুরের সাংসদকে মঞ্চে বসিয়ে অপমান-অবজ্ঞার কথা শোনালেন মহিলা কংগ্রেসের ব্লকের নেত্রী-কর্মীরা।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৬:২৫
Share:

—ফাইল চিত্র।

সাধারণের মন জয় করতে যাঁদের ঠেলে দেওয়া হচ্ছে ঘরের হেঁশেলে, দলের উঠোনেই তাঁদের জন্য বরাদ্দ অসম্মানের পাহাড়!

Advertisement

পুর নির্বাচনের আগে, মহিলা কংগ্রেসের সম্মেলনে বসে দলের নেতা অধীর চৌধুরীর তেমনই অভিজ্ঞতা হল মঙ্গলবার। বহরমপুরের সাংসদকে মঞ্চে বসিয়ে সেই অপমান-অবজ্ঞার কথা শোনালেন মহিলা কংগ্রেসের ব্লকের নেত্রী-কর্মীরা। এ দিন দুপুরে বহরমপুরের রবীন্দ্রসদনে জেলা মহিলা কংগ্রেসের উদ্যোগে বুথ স্তরের কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ব্লক ও পুর এলাকা থেকে আসা মহিলা কর্মী ও নেতৃত্বের মনের কথা বলার সুযোগ দিয়েছিলেন দলীয় নেতারা। বলার সুযোগ পেয়েই অভিযোগের পরত খুললেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য একমনে শুনে উত্তরও দিয়েছেন অধীর।

ভগবানগোলা ১ ব্লক মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী হেনা বিবি মঞ্চে উঠে বলেন, ‘‘ব্লক নেতৃত্বের কাছ আজ পর্যন্ত কোনও সম্মান পেলাম না। অথচ দেখুন, অধীরদা আমাদের কথা শোনার জন্য দিল্লি থেকে উড়ে এসেছেন। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হলে জেলার সব স্তরের নেতারা কথাটা মনে রাখবেন। সম্মান না পেলে পাল্টা সম্মান দেখানো যায় না।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: শান্তির সমাবর্তনেও কটাক্ষ রাজ্যপালের

কান্দি ব্লকের সভানেত্রীর আক্ষেপ, ‘‘আমরা সারা বছর সংগঠন করি। বাড়ির মহিলারা রাজনীতি বোঝেন না অজুহাত দেখিয়ে দলীয় নেতারা তাঁদের পরিবারের মহিলাদের রাজনীতিতে আসতে দেন না। কিন্তু যখনই নির্বাচনে কোনও আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়, তখন রাজনীতি ‘না-বোঝা’ সেই বাড়ির মহিলাকে প্রার্থী করে দেন। আর সারা বছর কাজ করে আমরা হাঁ করে দেখি, এটা কি আমাদের প্রাপ্য!’’ ডোমকল ব্লকের মহিলা কংগ্রেসের নেত্রী রাশেদা বিবিও একই সুরে বলছেন, ‘‘বছরভর বুক চিতিয়ে আমরা লড়াই করব। ভোটের সময় দেখব, দলীয়-দাদা তাঁর স্ত্রী-মেয়েকে ভোটের ময়দানে নামিয়ে প্রার্থী করতে মরিয়া। আমদের কথা তাঁদের মনেও পড়ে না। এটা চলতে পারে না।’’

বছরভর সংগঠন করা দলের সেই মহিলা নেত্রীদের কথা শুনে অধীর বলেন, ‘‘কোন ব্লকের, কোন নেতা, কী বলল তা দেখার দরকার নেই। আপানারা দলের মূল সংগঠনের লেজুড় হয়ে থাকবেন না। নেতৃত্বে আসুন, কাজ করুন। মনে রাখবেন দল আপনাদের পাশে আছে।’’ এর পরেই দলের জেলা সভাপতি আবু হেনাকে তাঁর নির্দেশ, ‘‘আবু হেনাকে বলব তিনি যেন ব্লক সভাপতিদের নির্দেশ দেন মহিলা কর্মীদের সম্মান ও অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করার, কাগজে কলমে নয়, বাস্তবে। এমনটাই দেখতে চাই।’’

অধীর মনে করিয়ে দেন, রাজীব গাঁধী ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলেন। দলের সর্বভারতীয় সভানেত্রীও মহিলা আছেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘তা হলে মহিলাদের সামনের সারিতে আনতে দ্বিধা কোথায়! দলের মহিলা সংগঠনের উদ্দেশ্যে বলছি, সামনে পুরভোট। প্রতিটি পুরসভায় মহিলাদের নিয়ে একটি করে গ্রুপ তৈরি করতে হবে। তাতে প্রয়োজনে অন্য (গ্রামীণ) এলাকার মহিলা কর্মীদের যুক্ত করে কাজে লাগাতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement