Adhir Chowdhury

মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে ফোনে কথা অধীরের, শান্তিস্থাপনে জেলার কংগ্রেস নেতৃত্বকে ‘জ়ুম’ বার্তা

শনিবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে কথা বলেন কংগ্রেসনেতা তথা বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী। সেই সঙ্গে জেলার কংগ্রেস নেতাদের অধীর বার্তা দিয়েন, শান্তিস্থাপনে এবং সম্প্রীতিরক্ষায় দ্রুত এলাকায় নামতে হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:২২
Share:
Adhir Chowdhury spoke to Governor CV Ananda Bose about the situation in Murshidabad

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।

নয়া ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই তপ্ত মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর। সেই এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতে না আসতেই নতুন করে অগ্নিগর্ভ হয়েছে ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জ, সুতির মতো এলাকা। এই পরিস্থিতিতে শনিবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন কংগ্রেসনেতা তথা বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী। সেই সঙ্গে জেলার কংগ্রেসনেতাদের বার্তা দিলেন, শান্তিস্থাপনে এবং সম্প্রীতিরক্ষায় দ্রুত এলাকায় নামতে হবে।

Advertisement

অধীর আপাতত রয়েছেন দিল্লিতে। দু’এক দিনের মধ্যেই তিনি রাজ্যে তথা নিজের জেলা মুর্শিদাবাদে ফিরবেন। কিন্তু পরিস্থিতির গুরুত্ববিচারে দিল্লি থেকেই অধীর ফোনে কথা বলেন রাজ্যপালের সঙ্গে। ‘জু়ম’-এর মাধ্যমে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন জেলার কংগ্রেসনেতাদের সঙ্গেও। অধীরের অভিযোগ, ‘‘পুলিশের প্রাথমিক নিষ্ক্রিয়তার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে মুসলিমদের যে ভাবাবেগ রয়েছে, তা পুলিশের বোঝা উচিত ছিল।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘সুতি বা ধুলিয়ানে যে ভাবে লুটপাট চলেছে, তা করেছে বাইরের লোকজন।’’ অধীর দীর্ঘদিন ধরে মুর্শিদাবাদে রাজনীতি করছেন। একটা সময় পর্যন্ত বঙ্গ রাজনীতিতে মুর্শিদাবাদ ‘অধীরের জেলা’ বলেই খ্যাত ছিল। যদিও গত কয়েক বছর ধরেই তাতে চিড় ধরছিল। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বহরমপুরে তাঁর হারের পর ‘অধীরের জেলা’ লব্জটিও আপাতত অতীত। সেই প্রবীণ কংগ্রেসনেতা বলছেন, এমন হিংসাত্মক ঘটনার কথা তিনি সাম্প্রতিক অতীতে ঘটেছে বলে মনে করতে পারছেন না। অধীরের কথায়, ‘‘আশির দশকের শেষে এক বার বড় গন্ডগোল হয়েছিল। কিন্তু সেটাও এ রকম ছিল না। আমি তখন রাজনীতি করতাম না। তবে নিজেরা রাস্তায় নেমে, সবাই মিলে হিংসা ঠেকিয়েছিলাম।’’

ঐতিহাসিক কারণেই মুর্শিদাবাদে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের আধিক্য রয়েছে। কিন্তু অতীতে কখনওই তা রাজনীতিতে ‘মেরুকরণ’ তৈরি করেনি। যা দেখা যাচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে। বহরমপুরে যেমন অধীর জিতেছেন পাঁচ বার, তেমনই আরএসপির দীর্ঘ দিনের সাংসদ ছিলেন ত্রিদিব চৌধুরী। ব্রাহ্মণসন্তান প্রণব মুখোপাধ্যায় জিতেছিলেন মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর থেকে। আবার সেই মুর্শিদাবা‌দেই অধীর হেরে গিয়েছেন তৃণমূলের ক্রিকেটতারকা প্রার্থী, গুজরাতের বদোদরার ভূমিপুত্র ইউসুফ পাঠানের কাছে। হারের পর অধীরের বক্তব্য ছিল, তিনি হিন্দু-মুসলমান কোনওটাই হতে পারেননি বলে পরাজিত হয়েছেন। লোকসভায় প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা বলেছিলেন, ‘‘আমি স্যান্ডউইচ হয়েছি। এখানে হিন্দু ভোট ভাগ হয়েছে। মুসলিম ভোটও ভাগ হয়েছে। আমি না হিন্দু হতে পেরেছি, না মুসলিম।’’

Advertisement

ভোটের এক বছর পরে যখন সেই মুর্শিদাবাদ উত্তপ্ত, তখন সেই অধীরই বলছেন, ‘‘মেরুকরণের বিষের চাষ করা হয়েছে।’’ তবে তিনি এ-ও বলছেন, ‘‘সাংসদ অধীর এবং প্রাক্তন সাংসদ অধীরের কোনও ফারাক নেই। শান্তিরক্ষায় যা করতে হয় আমি করব। কংগ্রেস করবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement