DGP Rajeev Kumar On Agitations

পুলিশের সংযমকে দুর্বলতা ভাববেন না, গুন্ডামি করলে কঠোর ব্যবস্থা: রাজীব! চলছে গুজব তৈরির কারখানা: জাভেদ

ওয়াকফ আইন (সংশোধনী)-র বিরোধিতায় গত কয়েক দিন ধরে অশান্ত মুর্শিদাবাদের কিছু এলাকা। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে জড়িয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। এ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে কড়া বার্তা দিলেন রাজ্য পুলিশের প্রধান।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:১৯
Share:
(বাঁ দিকে) রাজীব কুমার। জাভেদ শামিম (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) রাজীব কুমার। জাভেদ শামিম (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

হিংসা, গুন্ডামি বরদাস্ত করবে না পুলিশ। প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ করতেও পিছপা হবে না। মুর্শিদাবাদে গত কয়েক দিনের অশান্তি নিয়ে বার্তা দিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে রাজীব বলেন, ‘‘মানুষের জীবন রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। তাই যেখানে যতটুকু প্রয়োজন পুলিশ পদক্ষেপ করেছে। কিন্তু পুলিশের সংযমকে দুর্বলতা হিসাবে দেখবেন না। প্রয়োজনে কঠোরতম পদক্ষেপ করবে পুলিশ।’’ পাশাপাশি গুজব নিয়েও মানুষকে সতর্ক করেছেন রাজ্য পুলিশের প্রধান। চেয়েছেন সাধারণ মানুষের সহযোগিতা। এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিমের কথায়, ‘‘গুজব তৈরির কারখানা চালানো হচ্ছে। সবাই সতর্ক থাকুন।’’ জাভেদ জানান, এ পর্যন্ত মোট ১১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

ওয়াকফ আইন (সংশোধনী)-র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরে কয়েক দিন ধরে অশান্তি চলেছে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর, সুতি, শমসেরগঞ্জে। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধেও জড়িয়েছেন বিক্ষোভকারীদের একাংশ। রাজীব জানিয়েছেন, শুক্রবার সুতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ চার রাউন্ড গুলিও চালিয়েছে। দু’জন জখম হন তাতে। তবে দু’জনেই বিপন্মুক্ত। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। এই প্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষের সহযোগিতা চেয়েছেন ডিজি। তিনি বলেন, ‘‘কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না। পুলিশকে সহযোগিতা করুন। গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি খারাপ করবেন না।’’ বেসরকারি সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদে অশান্তির ঘটনায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।

রাজীবের হুঁশিয়ারি, ‘‘চরম পর্যায়ে গেলে আমরাও (পুলিশ) কঠোর এবং কঠিনতম পদক্ষেপ করব। গুন্ডামি বরদাস্ত করব না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘মানুষের জীবন রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। প্রাণ দেওয়ার প্রয়োজন হলে পুলিশ প্রাণ দেবে। কারণ, সেটা আমাদের কর্তব্য। আর যাঁরা বদমায়েশি করছেন, তাঁরা সাবধান হোন। আগুন এবং মানুষের আবেগ নিয়ে খেলবেন না।’’ তিনি জানান, পুলিশের কন্ট্রোল রুম খোলা থাকছে। গন্ডগোল হলে ফোন করে থানায় খবর দিতে পারেন যে কেউ। পুলিশ সামলাবে। রাজীব এ-ও জানান, সেনা যা করতে পারে পুলিশ সেটা পারে না। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ট্রিগার হ্যাপি নয়। কিন্তু পরিস্থিতি সামাল দিতে আমাদের কড়া পদক্ষেপ করতে হচ্ছে।’’

Advertisement

রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের (মুর্শিদাবাদের) মধ্যে ভয়ভীতির সঞ্চার হয়েছে। এটা সহজে যাওয়ার নয়। এ ক্ষেত্রে পুলিশ এবং সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সুজার মোড়ে (মুর্শিদাবাদ) প্রচণ্ড সংযত থেকে পুলিশ পদক্ষেপ করেছিল। কিন্তু উত্তেজিত জনতাকে বাগে আনা যায়নি। প্রায় তিন ঘণ্টা পুলিশের উপর হামলা, দোকানপাট ভাঙচুর, সরকারি এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি করেন তাঁরা। তখন বাধ্য হয়ে পুলিশকে গুলি চালাতে হয়। চার রাউন্ড গুলি চালায় পুলিশ। তাতে দু’জন আহত হন। জানান, এ পর্যন্ত ১৫ জন আহত হয়েছেন। কয়েক জন গুরুতর আহত হয়েছেন।’’

অন্য দিকে, জঙ্গিপুরে ওয়াকফ আইন (সংশোধনী)-এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে হিংসার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ভিডিয়োবার্তা দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মুখ্যসচিবের কাছেও রিপোর্ট তলব করেছেন তিনি। ভিডিয়োবার্তায় তিনি বলেন, “গণতন্ত্রে প্রতিবাদ করা যায়, কিন্তু প্রতিবাদের নামে বিশৃঙ্খলা কাম্য নয়। দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

শুক্রবার বিক্ষোভ সামলাতে গিয়ে জখম হন ফারাক্কার এসডিপিও। জঙ্গিপুরের ধুলিয়ানে বিক্ষোভ চলাকালীন কিছু মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমানকে। তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, সাংসদের অফিসেও হামলা চলেছে। খলিলুর বলেন, “আমি তখন সাজুর মোড় পার হচ্ছিলাম। বিক্ষোভকারীরা আমাকে ঘিরে ধরে গালাগালি করে। কোনও সংগঠনের পতাকা বা নেতা সেখানে ছিল না। পরে পুলিশ আমাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement