Sovan Chatterjee

কাটছে নিষ্ক্রিয় দশা, দিল্লিতে বিজেপির বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়

বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিজেপির হয়ে সক্রিয় হচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। তাঁকেও সাংগঠনিক ও নির্বাচনী কাজে লাগাতে চাইছে দল।

Advertisement

ঈশানদেব চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২০ ১৯:৫৫
Share:

ফের সক্রিয় হচ্ছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। যোগ দিচ্ছেন দিল্লিতে বিজেপির বৈঠকে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

কাটছে প্রায় এক বছরের নিষ্ক্রিয়তা। ফের বিজেপিতে সক্রিয় হচ্ছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। সক্রিয় হচ্ছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বাংলার পরিস্থিতি এবং এ রাজ্যে বিজেপির সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে দিল্লিতে যে অত্যন্ত জরুরি বৈঠক শুরু হচ্ছে আজ বুধবার থেকে, সেই বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ পেলেন শোভন। গত প্রায় এক বছরে কলকাতায় বিজেপির একের পর এক কর্মসূচি এড়িয়ে গেলেও দিল্লির এই জরুরি বৈঠকে শোভন যোগ দিচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। এ দিন সকালেই সে বিষয়ে শোভন এবং বৈশাখীর সঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্বের চূড়ান্ত কথাবার্তা হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

২০১৯-এর ১৪ অগস্ট দিল্লিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সদর দফতরে গেরুয়া পতাকা হাতে নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে মোদী-শাহের দলে নাম লিখিয়েছিলেন শোভনরা। যোগদান পর্ব থেকেই অবশ্য বিজেপির সঙ্গে নানা টানাপড়েন শুরু হয়ে যায় শোভন-বৈশাখীর। রায়দিঘির তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায় ওই একই দিনে শোভনদের সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁকে ঘিরেই সমস্যা তৈরি হয়। টানাপড়েনের মাঝেই অবশ্য ২০ অগস্ট কলকাতায় বঙ্গ বিজেপির সদর দফতরে শোভন-বৈশাখীর সংবর্ধনার আয়োজন হয়। কিন্তু তার পর থেকে বিজেপির আর কোনও কর্মসূচিতে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে দেখা যায়নি। কখনও কলকাতায় অমিত শাহ সভা করতে এসেছেন, কখনও জগৎপ্রকাশ নড্ডা মিছিল করেছেন— প্রতি বারই ডাক পেয়েছেন শোভন। কিন্তু নানা কারণে কোনও বারই শেষ পর্যন্ত বিজেপির মঞ্চে আর শোভন পৌঁছননি।

এ বার কিন্তু আর তেমন হচ্ছে না। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই ঘর পুরোপুরি গুছিয়ে নিয়ে ময়দানে নামতে চাইছে বিজেপি। সেই লক্ষ্যেই রাজ্য বিজেপির সব গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে দিল্লিতে তলব করে প্রায় সপ্তাহব্যাপী বৈঠকের আয়োজন। সেই বৈঠকে শোভনকেও ডাকা হয়েছে। বৈঠকে শোভন যোগ দিচ্ছেন বলেও জানা গিয়েছে।

Advertisement

কলকাতার প্রাক্তন মেয়র নিজে এখনও বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনও কথা বলেননি। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁদের কথা যে হয়েছে এবং বৈঠকে যে শোভন যোগ দিচ্ছেন, সে কথা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় স্বীকার করেছেন। বিষয়টিকে অবশ্য এ দিন কিছুটা লঘু করেই দেখাতে চেয়েছেন বৈশাখী। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে আমাদের কথা হওয়ার মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা তো নেই। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই হন বা রাজ্য নেতৃত্ব, আমাদের সঙ্গে তাঁরা কখনওই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেননি। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যখনই প্রয়োজন হয়েছে, তাঁরা কথা বলেছেন, যোগাযোগে থেকেছেন। দিল্লিতে এ বারের এই বৈঠকটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং ডাক পাওয়া স্বাভাবিক।’’

আরও পড়ুন: রাতারাতি সিদ্ধান্ত বদল, বিজেপি ছেড়ে দিলেন মেহতাব

২৩ জুলাই থেকে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে যে কোনও এক দিন শোভন চট্টোপাধ্যায়কে বৈঠকে যোগ দিতে হবে বলে বিজেপি সূত্রে এ দিন জানা গিয়েছে। এই বৈঠকে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত শিব প্রকাশ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেননরা তো থাকছেনই, দলের প্রাক্তন সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বর্তমান সভাপতি জে পি নড্ডা, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষ-ও দফায় দফায় রাজ্য নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানা গিয়েছে।

শোভনের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যায়ও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফ থেকে শোভন ও বৈশাখীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। দিল্লিতে খুব গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক যে শুরু হচ্ছে, সে কথা তখনই শোভনদের জানানো হয়। বুধবার সকালে ফের ফোন আসে দিল্লি থেকে। বৈঠকে যোগ দেওয়ার আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানানো হয় সেই ফোনেই। তবে শুধু কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নয়, রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গেও এ দিন সকালে শোভনের কথা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কী কথা হল, সে বিষয়ে শোভন বা বৈশাখী, কেউই মুখ খোলেননি। তবে সব পক্ষের সঙ্গেই আলোচনা ‘ইতিবাচক’ বলে তাঁদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।

বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডার সঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়েছেন রাজ্যের দুই বিজেপি নেতা মুকুল রায় ও জয়প্রকাশ মজুমদারও। —ফাইল চিত্র

আরও পড়ুন: ‘সাংবিধানিক সঙ্কট’ বলছেন স্পিকার, রাজস্থান মামলা এ বার সুপ্রিম কোর্টে

একা শোভন চট্টোপাধ্যায় নন, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিজেপির হয়ে সক্রিয় হচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেও শোভন-বৈশাখী প্রায় এক বছর নিষ্ক্রিয় ছিলেন। এই সময়ের মধ্যে তাঁদের নিয়ে নানা জল্পনা ছড়াতে থাকে। ভাইফোঁটায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে শোভন-বৈশাখীর পদার্পণ, নবান্নে মমতার সঙ্গে বৈশাখীর বৈঠক, মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে চলচ্চিত্র উৎসবে শোভনদের হাজিরা এবং তাঁদের সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নিরন্তর যোগাযোগ— সব মিলিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল যে, তৃণমূলেই ফিরবেন শোভন। তবে সে জল্পনা সত্যি হয়নি। বিজেপির হয়ে যদি শোভন সক্রিয়ও হন, তা হলেও একা শোভনই, বৈশাখী নন— এমন গুঞ্জনও ছিল। শুধু শোভনকে নিয়েই বিজেপি আগ্রহী, বৈশাখীকে নিয়ে নয়, এই রকম দাবি ছিল রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের। সে সব দাবির সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে এ বার। কারণ শোভনের সঙ্গে বৈশাখীকেও সাংগঠনিক ও নির্বাচনী বিষয়ে বিজেপি কাজে লাগাতে চাইছে বলে মুরলীধর সেন লেন সূত্রের খবর।

তবে বিজেপির আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে দিল্লির বৈঠকে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের যোগদানের সিদ্ধান্ত কিন্তু অবশ্যই ঘটনাপ্রবাহে একটা নতুন মোড়। কারণ নানা অনুরোধ-উপরোধ এর আগেও এসেছে। কিন্তু এত দিন সে সবে মোটেই সাড়া দিচ্ছিলেন না কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা বেহালা পূর্বের বিধায়ক। এ বার সাড়া দেওয়ার কারণ কী, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক শিবিরে।

শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ মহল অবশ্য দাবি করছে, শোভন নিষ্ক্রিয় মোটেই ছিলেন না। তাঁর প্রায় সর্বক্ষণের সঙ্গীদের মধ্যে এক জনের ব্যাখ্যা, ‘‘শোভন চট্টোপাধ্যায় শুধু নির্বাচনভিত্তিক রাজনীতি করেন না। তিনি অনেক দূরের দিকে তাকিয়ে বৃহত্তর রণকৌশল তৈরি করে নিয়ে তবে মাঠে নামার পক্ষপাতী। তাই কোনও একটা নির্বাচন এসে গেল বলে তড়িঘড়ি ময়দানে নেমে পড়তে হবে, এমনটা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়। কলকাতা পুরসভার নির্বাচন করোনার কারণে হল না ঠিকই, কিন্তু নির্বাচন হবে হবে বলে যখন একটা রব উঠে গিয়েছিল, চারিদিকে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল, তখনও শোভন চট্টোপাধ্যায় মাঠে নামছিলেন না, সেটা সবাই দেখেছেন। কারণ ওই একটাই— নির্বাচনভিত্তিক রাজনীতি তিনি করেন না। যখন মনে হয়েছে যে, হোমওয়ার্ক সারা, তখনই তিনি উপযুক্ত সিদ্ধান্তের দিকে এগোতে শুরু করেছেন।’’

রাজ্য বিজেপির কর্মসূচিতে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার ফিরতে চলেছে এই ছবি। —ফাইল চিত্র

কিন্তু ‘হোমওয়ার্ক’ বলতে কী? শোভন ঘনিষ্ঠরা জানাচ্ছেন, ঘরে বসে থাকলেও গত ৮-৯ মাস ধরে বিভিন্ন স্তরের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রেখে গিয়েছেন শোভন। বিজেপির দক্ষিণ কলকাতা ও দক্ষিণ শহরতলি জেলা কমিটির সভাপতিও শোভনের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করে গিয়েছেন। আবার তৃণমূলে থাকাকালীন যে কাউন্সিলররা শোভনের অনুগামী হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তাঁদের সঙ্গেও কথাবার্তা চালিয়ে গিয়েছেন। মাঠে যখন নামবেন, তখন দলবল নিয়েই যাতে নামতে পারেন, সেই জন্যই পুরনো অনুগামীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা, মত শোভন ঘনিষ্ঠদের।

শুধু নীচের স্তরে অবশ্য নয়, বিজেপির রাজ্য স্তর ও কেন্দ্রীয় স্তরের নেতাদের সঙ্গেও শোভন শিবির সংযোগ রক্ষা করে চলছিল বলে খবর। ফলে চলতি মাসেই শোভনের জন্মদিনে গেরুয়া শিবির থেকে শুভেচ্ছার বন্যা বয়েছে। সামাজিক দূরত্ব সংক্রান্ত বিধিনিষেধের কারণে শোভনের জন্মদিনে এ বার লোকজন ডেকে পার্টি হয়নি। তা সত্ত্বেও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফ থেকে দূত মারফৎ শোভনের বাড়িতে উপহার পাঠানো হয়েছে বলে খবর। ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির শীর্ষনেতারাও। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফ থেকে কোনও উপহার তো দূরের কথা, ফোনও যায়নি ‘কাননের’ কাছে, গিয়েছে শুধু এক লিখিত শুভেচ্ছা বার্তা— জানাচ্ছেন, শোভন ঘনিষ্ঠরা। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে যে তৃণমূল কাউন্সিলররা গত বছরও শোভনের জন্মদিন এড়িয়ে গিয়েছিলেন, এ বার তাঁরাও জন্মদিনে শোভনের সঙ্গে দেখা করেছেন বা ফোনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে খবর। শোভন যে রাজনৈতিক সক্রিয়তায় ফিরছেন, সেই আঁচ পেয়েই কাউন্সিলরদের এই ভোলবদল বলে শোভনের কাছের বৃত্তের কয়েক জনের দাবি।

কিন্তু বিজেপি নেতাদের মতো তৃণমূলও তো শোভনের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগেই ছিল। তা হলে বিজেপির দিকে কেন? কেন তৃণমূলের দিকে নয়? প্রাক্তন মেয়রের ঘনিষ্ঠদের ব্যাখ্যা— শোভনের সঙ্গে তৃণমূল যে যোগাযোগ রাখছিল, সে যোগাযোগ শোভনকে গুরুত্ব দিয়ে দলে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য নয়, বরং শোভনকে নিষ্ক্রিয় করে রাখার জন্য। কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দলের হয়ে দাপিয়ে বেড়াতেন যে নেতা, তিনি বিজেপির হয়ে যেন সক্রিয় না হন, তৃণমূল শুধু এটুকুই নিশ্চিত করতে চেয়েছিল বলে শোভন শিবিরের দাবি। সেই কারণেই বৈশাখীর কলেজের সমস্যাও কিছুতে মেটানো হচ্ছিল না, ইচ্ছাকৃত ‘ঝুলিয়ে’ রাখা হচ্ছিল— অভিযোগ শোভন ঘনিষ্ঠদের।

প্রাক্তন মেয়রের রাজনৈতিক পরামর্শদাতাদের এক জনের কথায়, ‘‘কে কী উদ্দেশ্যে যোগাযোগ রাখছেন, সেটা বোঝার ক্ষমতা শোভনবাবুর নেই, এমনটা ভাবলে ভুল হবে। এক দিকে তৃণমূল নেতৃত্বের কথায় ও কাজে বিস্তর ফারাক ধরা পড়ছিল। অন্য দিকে বিজেপি নেতারা অত্যন্ত ইতিবাচক ভাবে সংযোগ রক্ষা করে চলছিলেন। কোনও পরিণত রাজনীতিকের পক্ষে এর পরেও সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।’’ অতএব দিল্লির বৈঠকে সামিল হচ্ছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র। তবে কোন দিন তিনি বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন, সেটা এখনও নির্ধারিত হয়নি। বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য তিনি দিল্লি যাবেন, নাকি বাড়ি থেকেই ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেবেন, তা নিয়েও আলোচনা চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement