অভিনেত্রী রুমা চক্রবর্তী
চরিত্রের নাম ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। তবে তার ছত্রে ছত্রে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদল। দক্ষিণ কলকাতার এক সাধারণ মেয়ে কী ভাবে রাজনৈতিক লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার শীর্ষে উঠছেন, সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বাঘিনি’ সিনেমার উপজীব্যই তাই। আর সেলুলয়েডে সেই ‘বাঘিনি’র চরিত্রেই অভিনয় করেছেন কোলাঘাটের রুমা চক্রবর্তী।
পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের বাড়বড়িশা গ্রামে বাড়ি মাঝবয়সী রুমার। নাটকের মঞ্চ থেকেই উত্থান এই অভিনেত্রীর। এর আগে গোটা তিনেক যাত্রা ও সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন তিনি। যাত্রার দর্শকেরাও রুমাকে পেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চরিত্রেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে আদর্শ মনে করেন রুমা। তাই তাঁর চরিত্রে অভিনয় করতে পেরে স্বভাবতই খুশি এই অভিনেত্রী। রুমা বলছিলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক লড়াইয়ের প্রতিফলন ঘটেছে ‘বাঘিনি’ সিনেমার ইন্দিরা চরিত্রটিতে। যে কোনও লড়াকু নারীর কাছে এমন চরিত্র আদর্শ।’’
কোথাও কারও নাম সরাসরি ব্যবহার না করেই মমতার রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ওঠা পর্যন্ত নানা ঘটনা প্রবাহ এই সিনেমায় তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে রয়েছে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম আন্দোলন কিংবা মহাকরণে মমতার আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও। তবে ‘বাঘিনি’কে মমতার বায়োপিক বলতে নারাজ পরিচালক নেহাল দত্ত। তাঁর মতে, ‘‘বাঘিনি সিনেমাটি আসলে এক সাধারণ নারীর অসাধারণ হয়ে ওঠার কাহিনি।’’
২০১৬ সালে এই ছবির শ্যুটিং শুরু হয়েছিল। কথা ছিল ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগেই মুক্তি পাবে সিনেমাটি। তবে তখন নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে এই ছবির মুক্তি স্থগিত হয়ে যায়। অবশেষে শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর রাজ্যের প্রায় চল্লিশটি হলে মুক্তি পেয়েছে ‘বাঘিনি’। বেশ কিছু হলের সামনে সিনেমার পোস্টার-ফেস্টুন ছিঁড়ে দেওয়া এবং কলকাতার মাল্টিপ্লেক্সগুলিতে ছবি দেখাতে না দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন পরিচালক নেহাল। বিজেপির নাম না করেই তিনি বলেন, ‘‘এই ছবি নিয়ে অনেক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন হলে এবং মাল্টিপ্লেক্সে ছবি চালাতে দেওয়া হচ্ছে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিপক্ষ বলছে তারা দু’শো আসন পাবে। তাহলে তাদের এই ছবি নিয়ে এত ভয় কেন?’’
এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিজেপি কোথাও পরিকল্পিত ভাবে বিক্ষোভ দেখিয়েছে বলে জানা নেই। আর বিজেপি বাঘিনিকে ভয়ও
পায় না।’’
তবে শত বাধা এলেও এই ছবি দর্শক পছন্দ করবেন বলেই আশা পরিচালক নেহাল ও অভিনেত্রী রুমার। আর রুমার ইচ্ছে, মমতা নিজে একবার সিনেমাটা দেখুন। অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং এই ছবি দেখলে তবেই আমার এই চরিত্রে অভিনয় করা সার্থক হবে।’’