প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠানোর পরেই ফোনে খুনের হুমকি পেলেন কৌশিক সেন। ছবি: ফাইল চিত্র।
রামের নামে ‘উস্কানিমূলক রণহুঙ্কার’ বন্ধে প্রধানমন্ত্রীকে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের একাংশ চিঠি দিয়েছিলেন। গোটা দেশে ঘটে চলা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উৎকণ্ঠার কথাও তাঁরা জানিয়েছিলেন সেখানে। সেই চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে ছিলেন নাট্য ব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন। এর পর তাঁকে ফোন করে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হল বলে অভিযোগ।
ইমেলে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে ওই চিঠি পাঠানো হয় মঙ্গলবার রাতে। তার পর বুধবার কৌশিককে এক ব্যক্তি একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন বলে অভিযোগ। কৌশিক জানান, বুধবার বিকেল তখন প্রায় সাড়ে চারটে হবে। তিনি নাটকের রিহার্সাল রুমে ছিলেন। সেই সময় ওই ফোনটি আসে। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, কেন প্রধানমন্ত্রীর দফতরে চিঠি পাঠানো হয়েছে? এর পর হিন্দুত্ব নিয়ে তাঁকে নানা কথা বলা হয়। কৌশিকের কথায়, ‘‘আমি প্রথমে খুবই ঠান্ডা মাথায় ওই ব্যক্তির কথা শুনছিলাম। প্রয়োজন মতো জবাবও দিচ্ছিলাম। কিন্তু ওই ব্যক্তি একটা সময়ে আমাকে বলেন, মুসলমানরা যখন কিছু করে তখন তো আপনাদের প্রতিবাদ করতে দেখি না। হিন্দুদের কিছু হলে একেবারে মেরে ফেলে দেব আপনাকে। তৃণমূলের টাকা খাচ্ছেন আপনি। আপনার বউ-ছেলেকে এর পর তৃণমূল মেরে ফেলবে, বুঝবেন তখন।’’
আরও পড়ুন: দাড়িভিটের কথা দিল্লির দরবারেও
আরও পড়ুন: এ বার মার মাদারিহাটে
এর পরেই বিষয়টি পুলিশে ফোন করে জানান কৌশিক। যে নম্বর থেকে ফোন এসেছিল সেটাও পুলিশকে দেন। তবে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত তিনি এ বিষয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ করেননি পুলিশের কাছে। তিনি বলেন, ‘‘প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি পাওয়ার পর পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি। নম্বরটাও দিয়েছি। ওঁরা বলেছেন, দেখছেন বিষয়টি।’’ কিন্তু লিখিত ভাবে অভিযোগ করলেন না কেন? কৌশিকের দাবি, ‘‘পুলিশকে জানিয়েছি। ওঁরা দেখছেন। লিখিত অভিযোগ করার মতো সময় পাইনি এখনও।’’
প্রধানমন্ত্রীকে বিশিষ্টজনেদের চিঠি পাঠানোর পর রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছিলেন, যাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন তাঁরা অ্যান্টি-ন্যাশনাল। ওঁরা বিরোধী দলগুলোর চামচা। বিজেপির বদনাম করতেই এ সব করা হচ্ছে বলে দিলীপবাবুর মত। তিনি আরও জানিয়েছিলেন, এর পর থেকে ওই সব ব্যক্তিরা যেখানে যাবেন বিজেপি কর্মীদের প্রতিবাদের মুখে পড়তে হবে তাঁদের।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ফোনটি পাওয়ার পর কৌশিক সেন কলকাতা পুলিশের এক যুগ্ম কমিশনারকে ফোন করেন। যে নম্বর থেকে ফোন আসে, সেটি তিনি জানান। এর পর তাঁকে যাদবপুর থানায় লিখিত ভাবে অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। যদিও সেই অভিযোগ এখনও পর্যন্ত করা হয়নি। পুলিশ গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। যে মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করা হয়েছিল, সেটিরও হদিশ পাওয়ার চেষ্টা চলছে।