অভিযুক্ত ছাত্রনেতা সঞ্জীব প্রামাণিক। নিজস্ব চিত্র
অডিয়ো-আস্ফালনের বিষয়টি সোমবার প্রকাশ্যে আসার পরে পরেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা সঞ্জীব প্রামাণিক কবুল করেছিলেন, ওই অডিয়োর কণ্ঠস্বর তাঁরই। পরে অবশ্য তিনি সেই অডিয়োর সত্যতা পরীক্ষা করার দাবি তোলেন। এবং মঙ্গলবারেও তিনি সেই দাবিতে অনড়। যাদবপুরের শিক্ষকদের সম্পর্কে ওই অডিয়ো ক্লিপে (যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার পত্রিকা) সঞ্জীবকে যে-কুকথা বলতে শোনা গিয়েছে, তাতে তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মনে করেন সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। কিন্তু সঞ্জীব জানান, ক্ষমা চাওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। আগে পুরো বিষয়টির সত্যতা যাচাই করা হোক। যদি দোষী সাব্যস্ত হন, তা হলে ক্ষমা কেন, আরও অনেক কিছু করতেই তিনি রাজি।
সোমবার ওই অডিয়োয় সঞ্জীবকে বলতে শোনা যায়, ‘কোন শিক্ষকের কলার ধরতে হবে? ধরে নেব। এত বড় ক্ষমতা রাখে সঞ্জীব প্রামাণিক।...যারা এই মিটিংয়ে (ওই অডিয়ো যে-বৈঠকের) প্রেজ়েন্ট আছ, তারা খুব কম জনই জানো আমার অওকাত সম্পর্কে। আজকে দাঁড়িয়ে জুটা-র কোন লোকের কলার ধরতে হবে, সঞ্জীব প্রামাণিক ধরে দেবে।’
এই ধরনের ‘হেট স্পিচ’ বা ঘৃণাভাষণ কখনওই কাম্য নয় বলে মনে করেন চিরঞ্জীববাবু। কয়েক দিন আগে ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক এসএফআই নেতার বক্তব্য নিয়ে যে-বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল, সেই প্রসঙ্গ টেনে চিরঞ্জীববাবু এ দিন বলেন, ‘‘এগুলো যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্থ সংস্কৃতির পরিপন্থী।’’ এসএফআইয়ের ওই ছাত্র তাঁর বক্তব্যের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। সহ-উপাচার্য মনে করেন, অডিয়ো ক্লিপের ওই বক্তব্যের জন্য সঞ্জীবেরও ক্ষমা চাওয়া উচিত।
সঞ্জীব এ দিন বলেন, ‘‘এখনও কোথাও এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে জানি না। কর্তৃপক্ষের তরফে আমার সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগও করা হয়নি।’’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জুটা) এবং কর্মচারী সমিতির ডাকে এ দিন অরবিন্দ ভবনের সামনে দু’দফার প্রতিবাদ সভা ও মিছিলে যোগ দেন গবেষক সমিতি, পড়ুয়ারাও। মিছিল গোটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রদক্ষিণ করে যাদবপুর থানা পর্যন্ত যায়। জুটা-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক কালে রাজ্যের ঘটনাবলি, শিক্ষা ক্ষেত্রে নৈরাজ্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের প্রতি এক ছাত্রনেতার হুমকি। সরকারকে এই ধরনের ঘটনা কঠোর ভাবে প্রতিহত করতে হবে।’’ সংশ্লিষ্ট অডিয়ো ক্লিপের বক্তব্যের নিন্দা করেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের ইউনিটও।