বছর ছয়েক আগে উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুর স্টেশন চত্বরে অ্যাসিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন এক যুবতী। পরে তাঁকে অপহরণ করে দিনের পর দিন ধর্ষণও করা হয়। দু’টি অপরাধের দায়ে বছর পঞ্চাশের এক প্রৌঢ়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল বারাসত আদালত। অ্যাসিড হামলায় রাজ্যে কোনও অভিযুক্তের এই প্রথম এমন সাজা হল বলে জানান আইনজীবীরা।
বুধবার বারাসত আদালতের এক নম্বর ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক শ্রীময়ী কুণ্ডু আমডাঙার বাসিন্দা, প্রৌঢ় জামালুদ্দিন মল্লিক ওরফে জামালকে ওই সাজা শোনান। মুম্বইয়ে প্রীতি রাঠি নামে দিল্লির এক নার্সের উপরে অ্যাসিড হামলা এবং তাঁকে খুনের ঘটনাকে ‘বিরল থেকে বিরলতম’ চিহ্নিত করে ৯ সেপ্টেম্বর মুম্বইয়ের বিশেষ মহিলা আদালত দোষী অঙ্কুরলাল পানোয়ারকে ফাঁসি দিয়েছিল। সেটা অ্যাসিড হানায় মৃত্যুর ঘটনায় দেশে প্রথম মৃত্যুদণ্ড।
বারাসত আদালতে সরকারি কৌঁসুলি বিপ্লব রায় জানান, ২২ জন সাক্ষীর শুনানির পর বিচারক জামালকে অ্যাসিড হামলার জন্য যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। সাজা হয়েছে ধর্ষণের দায়েও। ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
কেন নির্যাতন চালানো হয়েছিল? পুলিশ জানায়, জামাল ওই যুবতীর এক বান্ধবীকে উত্ত্যক্ত করত। যুবতী প্রতিবাদ করায় ২০১০-এর ৩০ নভেম্বর তাঁর উপরে অ্যাসিড ছোড়ে জামাল। হুমকিও দেয়। জামাল সিপিএম নেতা বলে তখন যুবতী ও তাঁর পরিবার চুপ ছিলেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ জামালকে গ্রেফতার করে। জামিন পেয়ে পুলিশে অভিযোগ জানানোর ‘অপরাধে’ জামাল ২০১২ সালের ডিসেম্বরে যুবতীর মাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। পরে যুবতীকে অপহরণ করে জামাল একাধিকবার ধর্ষণ করে। তদন্তে নেমে আমডাঙার একটি ঘর থেকে যুবতীকে পুলিশ উদ্ধার করে। যুবতী এখনও পুরেপুরি সুস্থ নন। অ্যাসিডে তাঁর যুবতীর মুখ-সহ শরীরের নানা জায়গা পুড়ে গিয়েছিল। প্রথমে তাঁকে হাবরা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরে চিকিৎসা হয় একটি নার্সিংহোমে।