যে ছেলে দু’-চার দিন আগেও বাড়ি বসে চিত্রনাট্য লিখেছে, শুনিয়েছে মাকে, মাঠে কাজ করেছে বাবার সঙ্গে— সে-ই যে কাউকে খুন করে এসেছে, ভাবতে পারছেন না অসীম সরকারের বাবা-মা।
নদিয়ার হরিণঘাটার দিঘল গ্রামে ছোট্ট এক চিলতে দরমার বাড়ি অসীমদের। দুই ভাই। ছোটজন কলেজে পড়ে। বাবা কৃষ্ণপদ সরকার দিনমজুর। অসীম নিজেও বিএসসি পড়েছে। গরিব পরিবারের বড় ছেলে অসীমের ছবি তোলার শখ অনেক দিনের। টালিগঞ্জে ফিল্ম জগতে কাজ করারও শখ। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেল, ছোট থেকে গল্প লিখত অসীম। চিত্রনাট্যও লিখেছে বেশ কিছু। সে সব নিয়ে টালিগঞ্জে দৌড়োদৌড়ি করেছে বিস্তর। ইচ্ছে ছিল, তার চিত্রনাট্য নিয়ে কোনও প্রযোজক-পরিচালক ছবি কিংবা সিরিয়াল বানাবেন। কিন্তু অসীমের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়েনি। কেউ বেছে নেননি তার গল্প, চিত্রনাট্য।
হাল ছাড়েনি অসীম। মাস ছ’য়েক আগে যখন অসীমকান্তিবাবুর ছবিতে সহকারী চিত্রগ্রাহকের কাজ করে, তখন অসীম ঠিক করে, ক্যামেরার কাজ করেও টলিউডে নাম করতে পারে সে। কিন্তু একটা ভাল ক্যামেরা থাকলে সুবিধা হয়। সেই চিন্তাই কাল হল ওই যুবকের, মনে করছেন তদন্তকারীরাও। ৬ লক্ষ টাকা দামের ক্যামেরার লোভেই সে অসীমকান্তি পালকে খুন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অসীমের বাবার কথায়, ‘‘ছেলে সারা দিন লেখালিখি করত। খেতে কাজও করত। ওর মাথায় এ সব কী ভাবে এল, ভেবেই পাচ্ছি না।’’
অসীমকে জেরা করে ক্যামেরা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায়।