(বাঁ দিকে) তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ এবং ধৃত অভিযুক্ত ফুলবাবু (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের উপর হামলাকারী দলটির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন বিহার থেকে ধৃত ‘ফুলবাবু’। আদালতে এমনই জানাল পুলিশ।
কসবার তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্তকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে শুক্রবার বিহারের সমস্তিপুর থেকে ‘ফুলবাবু’ নামে বছর পঁয়তাল্লিশের ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, কসবাকাণ্ডে ধৃতদের জেরা করে উঠে এসেছিল তাঁর নাম। তাঁর খোঁজে বিহার পাড়ি দেয় কলকাতা পুলিশের একটি দল। শেষমেশ শুক্রবার সমস্তিপুরের আধারপুর চাকনিজ়াম গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
কসবার তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে খুনের চেষ্টার ঘটনায় শুক্রবারই বিহার থেকে ধরা পড়েছেন ‘ফুলবাবু’। শনিবার তাঁকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়। আগামী ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফুলবাবুর পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
শনিবার আদালতে সুশান্তের আইনজীবী জানিয়েছেন, তদন্তে জানা গিয়েছে, সুশান্তের বাড়ির সামনে আততায়ী যুবরাজকে পাঠিয়েছিলেন এই ফুলবাবুই। সুশান্তকে খুনের চেষ্টার ঘটনায় অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন ফুলবাবু। নিজে লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে তিনিই তৃণমূল কাউন্সিলরকে খুনের ছক কষেছিলেন বলে দাবি সুশান্তের আইনজীবীর। এ ছাড়াও অভিযোগ, ওই ঘটনায় সাহায্য করতে বিহার থেকে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদেরও একত্রিত করেছিলেন ফুলবাবু।
অন্য দিকে, আদালতে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ফুলবাবু সুশান্তকে খুনের চেষ্টার নেপথ্যে থাকা ‘গ্যাং’টির গুরুত্বপূর্ণ চক্রী এবং সদস্য। তিনিই ওই গ্যাংটি পরিচালনা করতেন বলে দাবি তদন্তকারীদের। পুলিশ জানিয়েছে, দলের অন্য সদস্যদের খোঁজে শীঘ্রই ফের বিহার যাবে তাদের একটি দল।
গত ১৫ নভেম্বর নিজের বাড়ির সামনেই সুশান্তকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর চেষ্টা করেন এক আততায়ী। তবে, গুলি না চলায় প্রাণে বাঁচেন সুশান্ত। এর পরই ধরা পড়েন শুটার যুবরাজ সিংহ। জেরায় উঠে আসে ‘মূল ষড়যন্ত্রকারী’ গুলজ়ারের নাম। সেই সঙ্গে আহমেদ আলি নামে এক ট্যাক্সিচালকও গ্রেফতার হয়। খুনের চেষ্টায় ব্যবহৃত একটি পিস্তল এবং স্কুটারও বাজেয়াপ্ত করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের জেরা করে ফুলবাবুর নাম উঠে আসে। সুশান্তকে খুনের পরিকল্পনায় তাঁর যোগ আছে বলেও দাবি করা হয়। ঘটনার দিন কয়েক আগে থেকেই আনন্দপুরের গুলশন কলোনিতে থাকতে শুরু করেছিলেন ফুলবাবু। তবে কসবাকাণ্ডে তাঁর কী ভূমিকা ছিল, তা খতিয়ে দেখতে এখনও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
ঘটনার পর থেকেই কসবাকাণ্ডে বিহার-যোগের দাবি করে আসছেন তদন্তকারীরা। প্রথমে পুলিশ জানিয়েছিল, গুলজ়ারই সুশান্তকে খুনের পরিকল্পনা করেন। কিন্তু পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে বিহারে তাঁর এক পরিচিতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। ‘শুটার’ ভাড়া করা থেকে শুরু করে অস্ত্র জোগাড়— সবটাই হয় ওই ব্যক্তির সাহায্যেই। সুশান্তকে খুন করতে বিহার থেকে আনা হয় অস্ত্রও। তবে তদন্তকারীদের দাবি, গুলজ়ার, যুবরাজ, আহমেদ, ফুলবাবু ছাড়াও সুশান্তকে খুনের পরিকল্পনার ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত। তাঁদের খোঁজে চলছে তল্লাশি অভিযান।