রায়গঞ্জে আদিবাসী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে শুক্রবার যে অশান্তি হয়েছে, তার পিছনে বামপন্থীদের ভূমিকা আছে বলে নবান্নে প্রাথমিক ভাবে খবর পৌঁছেছে। রায়গঞ্জের সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম অবশ্য শনিবার বলেছেন, ‘‘এই বিক্ষোভের পিছনে সরাসরি কোনও রাজনৈতিক দলের ভূমিকা ছিল না।’’
কিন্তু আদিবাসীদের শুক্রবারের ওই আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি দেখে রাজনৈতিক মহলে দু’টি প্রশ্ন উঠছে। এক, কারা ওই আদিবাসীদের সংগঠিত করল? দুই, কারাই বা গ্রামাঞ্চল থেকে রায়গঞ্জে তাঁদের নিয়ে এল? রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, শুক্রবার আদিবাসীরা যে ভাবে পুলিশের চোখের সামনে রায়গঞ্জে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন, কোনও রাজনৈতিক নকশা ছাড়া তা সম্ভব নয়। সেখানেই প্রশ্ন উঠছে, নকশার পিছনে তা হলে কে?
সেলিমের দাবি, ‘‘ওই বিক্ষোভের পিছনে যদি কোনও রাজনৈতিক দলকে দায়ী করতেই হয়, তা হলে তা তৃণমূল।’’ যদিও সিপিএম সূত্রের বক্তব্য, আদিবাসীদের মধ্যে এখনও তাদের সংগঠনই প্রভাবশালী। কিন্তু পরিস্থিতি যে রকম অরাজক হয়ে উঠেছিল, তাতে সরাসরি দল এখন তার দায় নিতে চায় না। তাই সেলিমের মতো নেতা ওই বিক্ষোভের সঙ্গে নিজেদের প্রত্যক্ষ ভাবে জড়াননি।
আরও পড়ুন: আদিবাসী আন্দোলনে তাণ্ডব রায়গঞ্জে, পুলিশ সুপারকে শো-কজ নবান্নর
তৃণমূল বিষয়টিকে এ ভাবে দেখছে না। দলের মতে, বিজেপি-সিপিএম সবাই নিজেদের মতো করে যে যেখানে পারে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করে রাজ্যে আগুন জ্বালাতে চাইছে। রায়গঞ্জ তারই আর একটি উদাহরণ। নবান্ন শনিবার তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি এর পিছনে কার কী রাজনৈতিক উস্কানি ছিল, তা-ও খতিয়ে দেখতে চাইছে।
রায়গঞ্জে ওই আদিবাসী আন্দোলনের আপাত কারণ— গত রবিবারের নাবালিকা ধর্ষণ ও মহিলা নির্যাতনের ঘটনায় সব অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়নি। কিন্তু সিপিএমের ব্যাখ্যা, ১০০ দিনের কাজে টাকা ও রেশনে ২ টাকা কিলো চাল না পাওয়া এবং দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্যের কারণে আদিবাসীদের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরেই ক্ষোভ জমছিল। ধর্ষণ-কাণ্ড তাতে ইন্ধন দিয়েছে। তৃণমূলের অবশ্য বক্তব্য, সিপিএমের এই ব্যাখ্যা থেকেই স্পষ্ট, রায়গঞ্জে শুক্রবারের আন্দোলনের পিছনে কারা ছিল।