শুভেন্দু অধিকারী
রোগ ধরে দিলেন মন্ত্রী। এবং দাওয়াই বাতলে দিচ্ছেন তিনিই।
পরিবহণ নিগমগুলির আয় মার খাচ্ছে। কেন? চুরির চক্র কাজ করছে ওই সব নিগমে। রোগ এটাই। বিধানসভার বাইরে স্বীকার করেছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।
এই চুরি-রোগ ঠেকাতে মন্ত্রীর দাওয়াই, কর্মীদের কিছু দিন অন্তর বদলি। তিনি বলেন, ‘‘ডিপো ইনচার্জ, চালক, কন্ডাক্টর— এঁদের ছ’মাস এক জায়গায় রাখা যাবে না। বদলি করে দিতে হবে। সেটা করা হচ্ছে না বলেই এঁদের মধ্যে চক্র তৈরি হয়ে যাচ্ছে।’’
শাসক বা বিরোধী, কোনও পক্ষের কর্মী ইউনিয়নের নেতারাই অবশ্য মন্ত্রীর এই মন্তব্যের সঙ্গে একমত নন। এমন চক্র যে রয়েছে, তা মেনে নিচ্ছেন সিএসটিসি-র শাসক দলের ইউনিয়নের নেতা গৌতম চক্রবর্তী। তবে তিনি বলছেন, ‘‘বদলি করে চুরি ঠেকানো যাবে না। নজরদারি ঠিকমতো হলে তবেই চুরি কমবে।’’ একই বক্তব্য বিরোধী সিটু ইউনিয়নের নেতাদের। সিএসটিসি-র সিটু ইউনিয়নের নেতা রমাপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘সরকার যদি এ ভাবে চুরি ঠেকাতে পারে, সেটা তো ভালই! তবে চুরি আটকানোর জন্য সরকার তো পয়সা দিয়ে
কর্মী রেখেছে। তাঁদের কাজে লাগানো হচ্ছে না কেন!’’
পরিবহণকর্তারা জানাচ্ছেন, এমন অভিযোগ মোটেই নতুন নয়। এর আগে বহু বার এই অভিযোগ উঠেছে। কন্ডাক্টরেরা যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েও টিকিট দেন না। সেই টাকা ভাগাভাগি হয়ে চলে যায় চালক এবং ডিপো ইনচার্জের পকেটে। অর্থের বিনিময়ে মুখ বন্ধ রাখছেন তাঁরাও। এই প্রথা বন্ধ করতে বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে রুটের মধ্যে যাত্রীদের কাছে টিকিট পরীক্ষার ব্যবস্থা চালু করেছে কয়েকটি নিগম। তাতে কিছুটা হলেও চুরি ঠেকানো গিয়েছে। যদিও চুরি পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি।
এ বার চুরি বন্ধ করতেই মন্ত্রী এমন পদক্ষেপ করতে চাইছেন বলে মনে করছেন পরিবহণ দফতরের কর্তারা। ওই দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘চুরি তো হয়ই। তা ঠেকাতে পারলে নিগমের আয় অনেক বাড়বে। তাতে ভর্তুকির পরিমাণও কমবে।’’