গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কার্যকলাপে সমর্থন নেই। গোর্খাল্যান্ডের দাবিতেও সহমতের প্রশ্ন নেই। কিন্তু পাহাড়ের পরিস্থিতি আবার তপ্ত হয়ে ওঠার পিছনে রাজ্য সরকারের পদক্ষেপকেও দায়ী করছে বিরোধী দুই পক্ষ কংগ্রেস এবং বামফ্রন্ট। আর এক বিরোধী দল বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বও বিমল গুরুঙ্গের পাশে দাঁড়াননি। তবে তাঁরাও সরব রাজ্যের ভূমিকার বিরুদ্ধে।
পাহাড়ে বিভাজনের রাজনীতির প্রতিবাদে ও শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবিতে ১৭ জুন শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্ক থেকে ভানুভক্তের মূর্তি পর্যন্ত কংগ্রেস মিছিলের ডাক দিয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী মঙ্গলবার বলেন, ‘‘বিমল গুরুঙ্গের দাদাগিরি আর মুখ্যমন্ত্রীর দিদিগিরির চোটে পাহাড়ের অবস্থা কাহিল! পাহাড় আর সমতলে আমরা কোনও বিভেদ চাই না। সেই বার্তা দিতেই মিছিল হবে।’’ কিন্তু পাহাড় নিয়ে মিছিল শিলিগুড়িতে কেন? অধীরবাবুর অকপট জবাব, ‘‘পাহাড়ে আমাদের অত লোক নেই। আমরা তো তৃণমূল নই যে, পুলিশ পাহারা দিয়ে পাহাড়ে লোক নিয়ে যাব!’’
অধীরবাবু এবং বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, দু’জনেরই বক্তব্য, পাহাড়ে শান্তির লক্ষ্যে সুবাস ঘিসিঙ্গদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী যখন চুক্তি করেছিলেন, সেখানে ‘গোর্খাল্যান্ড’ কথাটা রাখা হয়নি। তৈরি হয়েছিল দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদ। কিন্তু তৃণমূল সরকারের আমলের জিটিএ নামের মধ্যেই গোর্খাল্যান্ডের ‘স্বীকৃতি’ আছে। অধীরবাবু এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের চোখ দেখালে আমরা প্রত্যাঘাত করব, মিরিখে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এমন কথা বলার কী দরকার ছিল? পাহাড়ের তিনটি পুরসভা দখল করতে পারেননি বলে সেখানে স্পেশ্যাল অডিট! রাজনৈতিক প্রতিহিংসা তো বোঝা যাচ্ছে।’’
একই সুরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর প্ররোচনা নয়, আলোচনা চাই। ওঁর সারদা-নারদের অডিট কে করে, ঠিক নেই! পাহাড়ে স্পেশ্যাল অডিট হবে!’’ প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য মনে করিয়ে দিয়েছেন, পৃথক রাজ্যের দাবি যাতে সামনে না আসে, তার জন্যই অতীতে পার্বত্য পরিষদ বা এখন জিটিএ-কে স্বশাসন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার বারবার তাদের এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপ করে গুরুঙ্গদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ।