অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
কয়লা পাচার-কাণ্ডে অবশেষে ইডি দফতর থেকে বেরোলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সকাল ১১টায় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে (ইডির দফতর) অভিষেককে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট আগে ইডি দফতরে পৌঁছন তৃণমূলের ‘সেনাপতি’। সূত্রের খবর, সকাল ১১টা থেকে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তদন্তকারীরা।
এর আগে, এই মামলায় দিল্লিতে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। ইডি তলব নিয়ে বিজেপিকে নিশানা করেছিলেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেছিলেন, ‘‘ইডি, সিবিআইকে কাজে লাগিয়ে যাঁরা স্বার্থ চরিতার্থ করতে চান, তাঁদের বলতে চাই, আমি আমার অবস্থানে অনড় থাকব। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুবরণ করব। কিন্তু ইডি-সিবিআইয়ের কাছে মাথা নোয়াব না।’’ তদন্তে বরাবর সহযোগিতা করেছেন বলেও দাবি করেছেন তিনি।
চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার অভিষেককে ইডির তলবের খবর প্রকাশ্যে আসে। ঘটনাচক্রে সোমবার ধর্মতলার মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাদিবসের কর্মসূচিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘অভিষেককে হয়তো আবার নোটিস পাঠাবে ওরা।’’ ওই মঞ্চে দাঁড়িয়ে অভিষেকও বলেছিলেন, ‘‘কিছু ঘটবে।’’ পরের দিনই, অর্থাৎ মঙ্গলবার অভিষেককে ইডির তলবের খবর রাজ্য রাজনীতিতে আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। ইডির তলবের ঘণ্টা খানেক পর ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো’(এনসিআরবি)-র একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে টুইটারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিশানা করেছিলেন অভিষেক। তৃণমূল সাংসদ লিখেছিলেন, ‘ইডির সঙ্গে পুতুলখেলার বদলে বাংলার শাসনব্যবস্থা থেকে ওঁর শিক্ষা নেওয়া উচিত।’
এই মামলায়, গত ২৩ জুন সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিয়েছিলেন অভিষেক-পত্নী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুত্রসন্তানকে কোলে নিয়ে ইডি দফতরে গিয়েছিলেন অভিষেক-ঘরনি। কয়লাপাচার-কাণ্ডে এ একাধিক বার জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে দিল্লিতে অভিষেক-পত্নীকে তলব করেছিল ইডি। কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তলব সত্ত্বেও হাজিরা দেননি রুজিরা। অতীতে অভিষেকের বাড়িতে গিয়ে রুজিরাকে এক বার জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়েছিল সিবিআই।
কয়লা-কাণ্ডে অভিষেকের শ্যালিকা মেনকা গম্ভীরকে দিল্লিতে তলব করেছিল ইডি। এর পরই রক্ষাকবচ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন মেনকা। গত বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের একক বেঞ্চ নির্দেশ দেয় যে, মেনকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হলে, কলকাতাতেই করতে হবে। এখনই তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না।