যন্তর মন্তরে তৃণমূলের ধর্নায় সুদ সমেত টাকা ফেরানের ঘোষণা অভিষেকের। ছবি: ফেসবুক।
বাংলার দাবি না মানলে দু’মাসের মধ্যে আবার দিল্লি যাবে তৃণমূল। আর এ বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এক লক্ষ মানুষকে নিয়ে আন্দোলন হবে। মঙ্গলবার দিল্লির যন্তর মন্তরের মঞ্চ থেকে ঘোষণা করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তিনি বাংলার জব কার্ড হোল্ডারদের কথা দিয়েছেন ছ’মাসের মধ্যে ১০ শতাংশ সুদ সমেত দিল্লি থেকে তাদের প্রাপ্য টাকা ফেরত আনবেন তিনি। অভিষেক বলেন, ‘‘যত দিন না বাংলার মানুষ নিজেদের অধিকার পাচ্ছে তত দিন কেন্দ্রীয় সরকারকে তৃণমূল এক ছটাক জমি ছাড়বেন না।’’
অভিষেক বলেছেন, ‘‘২০ লাখের যে টাকা আটকে রেখেছে, আমি বলছি তাদের টাকার ব্যবস্থা আমি করব দু’মাসের মধ্যে। বাকি রইল আরও ২০ লাখ। আমি কথা দিচ্ছি, আপনারা আমাকে ছ’ মাস দিন। ২০ লক্ষ লোকের টাকার ব্যবস্থাও আমি করব। মানুষ যদি চায় তবে এই ২০ লক্ষ মানুষের টাকা ১০ শতাংশ সুদ সমেত ফেরত নেব আমি।’’ কেন ১০ শতাংশ সুদ? তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন অভিষেক। তিনি বলেছেন, ‘‘দু’বছর ধরে যে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে তার দাম দেবে কে?’’
তবে টাকা মেটানোর জন্য ছ’মাস সময় চাইলেও অভিষেক তারিখ বলেছেন ২০২৪ সালের ৩০ জুন। ঘটনাচক্রে তার আগের মাসেই শেষ হওয়ার কথা লোকসভা ভোট। যে ভোটে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে জোট বাধছে বিরোধীরা।
মঙ্গলবার ছিল দিল্লিতে তৃণমূলের ‘মিশন দিল্লি’র দ্বিতীয় দিনের অবস্থান কর্মসূচি। দুপুর ১টা থেকে যন্তর মন্তরের মঞ্চে ছিলেন তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রী, বিধায়ক এবং সাংসদেরা। ছিলেন পাওনা চাইতে দিল্লিতে আসা দিল্লির জব কার্ড হোল্ডাররাও। অভিষেক সেখানে এসে পৌঁছন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ। তবে বক্তৃতা দেন সবার শেষে।
নিজের ভাষণে অভিষেক প্রথমেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতার কথা টেনে আনেন। অভিষেক বলেন, ‘‘আজকের কর্মসূচির নেতৃত্বে থাকার কথা ছিল আমাদের সর্বজন শ্রদ্ধেয়া নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর পায়ে আঘাত লাগার কারণে চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি হয়তো সশরীরে দিল্লির সভায় এসে যোগদান করতে পারেননি। কিন্তু প্রতি মুহূর্তে কর্মীরা কেমন আছেন, সভা কেমন চলছে ঘণ্টায় ঘণ্টায় খবর নিয়েছেন।’’ এর পরেই দু’মাসের মধ্যে আবার দিল্লিতে সভা করার কথা বলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
অভিষেক বলেন, ‘‘আমি চ্যালেঞ্জ করছি। আজ ৫০০০ লোক এসেছে দু’মাসের মধ্যে এক লাখ লোক নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আমরা আবার সভা করব। বুকের পাটা থাকলে আটকে দেখান। যে দিল্লিতে অর্ডিন্যান্স জারি করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছেন, সেই দিল্লির বুকে দাঁড়িয়ে দু’মাসের মধ্যে আবার সভা করব। আবার মিছিল হবে।’’
বাংলার ৪০ লক্ষ জব কার্ড হোল্ডারের টাকা এবং আরও নানা কেন্দ্রীয় প্রকল্পের মোট এক লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা আটকে রাখার কথা বলেছে তৃণমূল। মঙ্গলবার অভিষেক বলেছেন, ‘‘কেন্দ্র বলছে দুর্নীতি হয়েছে বলে টাকা আটকেছে। দুর্নীতি হলে এফআইআর করেনি কেন? কত টাকার দূর্নীতি হয়েছে? ৭০০০ কোটি টাকা আটকে রেখেছেন। ৭০ কোটির দুর্নীতি দেখাতে পারবেন বা সাত কোটি? আর এর জন্য আপনি দু’কোটি ৬৪ লক্ষ জব কার্ড হোল্ডারকে বঞ্চিত করছেন। ২০ লক্ষ মানুষের দু’বছরের টাকা আটকে রেখেছেন।’’