অভিষেক-রুজিরার আর্জি খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। — ফাইল চিত্র।
কয়লা পাচার মামলায় ইডির সমনের বিরুদ্ধে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্জি খারিজ হয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, মামলায় হস্তক্ষেপ করবে না তারা।
২০২১ সালের ২২ জুলাই কয়লা পাচার মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী রুজিরা নারুলা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমন পাঠিয়ে তলব করেছিল ইডি। ইডির ওই সমনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রথমে তাঁরা দিল্লি হাই কোর্টে যান। দিল্লি হাই কোর্ট কোনও হস্তক্ষেপ না করায় শেষমেশ শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন সস্ত্রীক অভিষেক। অন্তর্বর্তী নির্দেশ হিসাবে সুপ্রিম কোর্ট অভিষেককে প্রাথমিক ভাবে রক্ষাকবচ দিয়ে বলে যে, আপাতত তাঁকে গ্রেফতার করা যাবে না। আরও নির্দেশ দেওয়া হয়, অভিষেককে দিল্লিতে তলবও করতে পারবে না ইডি। তৃণমূল সাংসদ এবং তাঁর স্ত্রীকে কলকাতায় এসেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে ইডি কর্তাদের। সোমবার বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী এবং বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মার ডিভিশন বেঞ্চ খারিজ করে দিল ইডির সমনের বিরুদ্ধে অভিষেক ও রুজিরার সেই আবেদন।
২০২১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ইডির সমনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে গিয়েছিলেন অভিষেকরা। তাঁদের দাবি ছিল, ইডির সমন খারিজ করতে হবে। এর পর ইডি যেন নতুন করে তাঁদের সমন না পাঠায়। এ ছাড়াও অভিষেকের আইনজীবী সঞ্জয় বসু জানান, মামলায় সর্বতোভাবে ইডিকে সাহায্য করে চলেছেন তাঁর মক্কেল। কিন্তু মামলাকারী একজন সাংসদ, তাই তাঁকে যেন দিল্লিতে তলব না করা হয়। যাবতীয় জিজ্ঞাসাবাদ যেন কলকাতাতেই করা হয়। প্রাথমিক ভাবে দু’টি দাবিই মেনে নিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
রুজিরাকেও ২০২১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর একই সমন পাঠিয়েছিল ইডি। দিল্লির পটীয়ালা হাউসের মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট ২০২১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর তাঁকে তলব করেন। সেই তলবের বিরুদ্ধেও সুপ্রিম কোর্টে যান রুজিরা। সোমবার সেই আবেদনও খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত।
২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর কয়লা পাচার মামলায় অভিষেক এবং তাঁর স্ত্রী রুজিরার বিরুদ্ধে প্রথম এফআইআর দায়ের করে সিবিআই। এফআইআরে নাম ছিল আরও অনেকের। অভিযোগ, কয়লাকাণ্ডে ১৩০০ কোটি টাকা বেআইনি আর্থিক লেনদেন হয়েছে। এই ঘটনায় ২০২১ সালের ১৬ মার্চ বিকাশ মিশ্র গ্রেফতার হন। একই বছরের ৩ এপ্রিল গ্রেফতার হন বাঁকুড়া থানার ওসি অশোক মিশ্র। এঁদের মাধ্যমেই কোটি কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ আনা হয়েছে। পরে ইডির কাছে মামলাটি হস্তান্তর করা হয়। এর পর থেকে অভিষেক এবং রুজিরাকে বেশ কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। দু’জনকে যখনই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, দিল্লি থেকে কলকাতায় এসেছেন ইডির আধিকারিকেরা। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসেও অভিষেকের রক্ষাকবচ বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট। এ বার সেই নির্দেশই ফেরাল শীর্ষ আদালত।