প্রতীকী ছবি
শনিবার ভোররাতেই অপহৃত চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টকে নিয়ে শিলিগুড়ি ঢুকেছিল পুলিশের বিশেষ দল। রবিবার সকালে শিলিগুড়ি শহরের পঞ্জাবিপাড়া এলাকার বাসিন্দা অপহৃত চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট কিসান আগরওয়ালকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ওই ঘটনায় চার অভিযুক্ত গত শুক্রবার ধরা হয়েছিল। পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেছে মুজফ্ফরপুর জেলার মোতিপুর থানার পুলিশ। শিলিগুড়ি পুলিশ সূত্রে দাবি, সেখানে মামলা থাকায় চার অভিযুক্ত আপাতত বিহার পুলিশের হেফাজতেই রয়েছে। তাদের রিমান্ডে আনতে আরও দু’একদিন সময় লাগবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, নিজের বাড়ি থেকে গত মঙ্গলবার সকালে বেরিয়ে নিখোঁজ হন কিসান। উত্তরপ্রদেশের কুশীনগর থেকে তিনবার এবং বিহারের গোপালগঞ্জ থেকে দু’বার মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে তাঁর বাড়িতে। কিসানকে অপহরণ করা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করে পরিবার। পাঁচ কোটি টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয় বলেও অভিযোগ। পরিবারের সদস্যরা ৫০ লক্ষ টাকা জোগাড় করে। পুলিশের দাবি, তাদের বিভ্রান্ত করতে কিসানকে নিয়ে উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের মধ্যে জায়গা বদল করে অপরাধীরা। শেষে কিসানকে আনা হয় মুজফ্ফরপুরের মোতিপুরে। রবিবার সকালে কিসানকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার পর দ্বিতীয় দফায় তাঁকে এবং পরিবারের সদস্যদের কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। কিন্তু আগরওয়াল পরিবারের কেউ কোনও কথা বলতে চাননি।
শিলিগুড়ি পুলিশের এক কর্তা জানান, পুলিশের তৈরি বিশেষ দল, গোয়েন্দা আধিকারিকরা এবং বিহার পুলিশ টাকার টোপ দিয়ে চার অভিযুক্তকে ধরে ফেলে। কিসান উদ্ধারের পর চার অভিযুক্তকে আটক করে এক দফায় জিজ্ঞাসাবাদও করে তদন্তকারীরা। তাদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়ার পরে মোতিপুর পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে অস্ত্র আইনে মামলা করে। পুলিশ সূত্রের খবর, এখানকার আদালতের সম্মতি এবং মুজফ্ফরপুর আদালতের সম্মতি নিয়ে অভিযুক্তদের শিলিগুড়িতে আনা হবে।
শিলিগুড়ি পুলিশ সূত্রে দাবি, কী ভাবে কিসান অপহৃত হলেন সেই গল্প তাঁর মুখেই শুনেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের জেরার সুযোগ মেলেনি। তাই আপাতত কিসানের বক্তব্যের সঙ্গে এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ এবং অন্য তথ্য মিলিয়ে তদন্ত এগিয়ে রাখা হচ্ছে। এ দিন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘শিলিগুড়ি পুলিশ খুব ভাল কাজ করেছে। রাজ্য পুলিশের শীর্ষমহল এবং সিআইডিও সাহায্য করেছে। আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেছিলাম।’’ অক্ষত অবস্থায় কিসান ফিরেছেন বলে নর্থ বেঙ্গল মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তা সঞ্জয় টিব্রেওয়ালও স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।