(বাঁ দিকে) বাবুল সুপ্রিয় এবং অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
দ্বিতীয় হুগলি সেতুর উপর দুই রাজনীতিক তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা শোরগোল ফেলে দিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। এক জন, তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। অন্য জন, তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। দুই রাজনীতিকের বাগ্যুদ্ধে রাতের দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে যানজট তৈরি হয়। শেষে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামলায়। সেই ঘটনা নিয়ে এ বার কলকাতা এবং হাওড়া পুলিশের কাছে অভিযোগ জানালেন প্রতাপ বসু নামে এক জন সমাজকর্মী। তাঁর প্রশ্ন, প্রভাবশালী বলেই কি ছাড় পেলেন ওই দু’জন? প্রতাপের দাবি, দু’জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ ‘মারাত্মক’। তাই সেই অভিযোগ খতিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। তৈরি হোক দৃষ্টান্ত!
দুই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের একে অন্যের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এমনই দাবি প্রতাপের। তাঁর কথায়, ‘‘দু’জনেই পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রতিনিধি। এক জন লোকসভায় যান, অন্য জন বিধানসভায়। দ্বিতীয় জন আবার মন্ত্রীও। প্রথম জন আবার প্রাক্তন বিচারপতিও। আমার মনে হয়, গতকাল ওঁরা যে ঘটনাটা ঘটিয়েছেন, অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলছেন, তা সুষ্ঠু পরিবেশকে নষ্ট করছেন।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘দ্বিতীয় হুগলি সেতু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার একটা অংশে ওই দু’জনের কারণে যে ভাবে যানজট তৈরি হয়, তা নিয়ে পুলিশ অফিসারেরা কি তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও রকম আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন? এটা যদি সাধারণ মানুষ হত তবে কী হত?’’ প্রতাপের বক্তব্য, ‘‘গোটা ঘটনার পুলিশি তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে। মানুষ যাতে বোঝেন, আইন সকলের জন্য প্রযোজ্য। বিত্তশালীরা ছাড় পেয়ে যাবেন, আর গরিবদের বিরুদ্ধে আইন উঠবে, তা আমি মেনে নিতে পারি না।’’ শুক্রবার রাতের ঘটনার কথা উল্লেখ করে প্রতাপ ইমেল এবং স্পিড পোস্টের মাধ্যমে কলকাতা পুলিশ এবং হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর দাবি, পুলিশ যদি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তবে উচ্চ আদালতে যাবেন তিনি।
শুক্রবার রাতে গাড়ি নিয়ে হাওড়ায় তাঁর বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন বাবুল। অভিজিতের গাড়িও কলকাতা থেকে হাওড়ার দিকে যাচ্ছিল। সেই সময়েই দুই নেতার মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। প্রায় ১৫-২০ মিনিট ধরে বচসা চলে দুই নেতার মধ্যে। তাতেই সেতুর উপর যানজটের সৃষ্টি হয়। বন্ধ হয়ে যায় দ্বিতীয় হুগলি সেতুর একটি লেন। পরে পুলিশের উচ্চ আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দু’জনকে বুঝিয়ে ঝামেলার নিষ্পত্তি করেন। তবে দুই নেতার বাক্বিতণ্ডার কারণে সেতুর দু’দিকেই পর পর গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ ওঠে, দুই নেতাই একে অন্যকে গালিগালাজ করেন।
বাবুলের অভিযোগ, তিনি নিজেই গাড়ি চালিয়ে ফিরছিলেন। সেই সময় পিছন থেকে হুটার বাজিয়ে প্রচণ্ড গতিতে একটি গাড়ি আসছিল। সেই গাড়িটি ছিল সাংসদ অভিজিতের। গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে বলাতেই নাকি তমলুক সাংসদ তাঁকে পাল্টা গালিগালাজ দেন। এমনকি, ‘দেখে নেওয়ার’ হুঁশিয়ারিও দেন অভিজিৎ। পাল্টা বিজেপি সাংসদের অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন বাবুল।