ভাঙড়ে মমতার সভা ছোট মাঠে

পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনের সাব-স্টেশন তৈরির কাজ বন্ধ রাখার দাবিতে ভাঙড়ে গ্রামবাসীরা আন্দোলনে নেমেছিলেন জানুয়ারিতে।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

ভাঙড় শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৭ ০৩:১৫
Share:

এক মাঠে লোক ধরে লক্ষাধিক।

Advertisement

আর এক মাঠে মাত্র কুড়ি হাজার।

কিন্তু বড় মাঠ ছেড়ে সোমবার ভাঙড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভার জন্য বাছা হল ছোট মাঠ! অথচ, সেই ছোট মাঠেই লক্ষাধিক লোক এনে নিজেদের ‘দাপট’ দেখাতে উঠে পড়ে লেগেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। যা চিন্তায় ফেলে দিয়েছে পুলিশ প্রশাসনকে। পুলিশকর্তারা নেতাদের ফোন করে কম লোক আনার আর্জি জানাচ্ছেন। ‘‘কিন্তু কেউ শুনলে তো!’’—এখনই আক্ষেপ করছেন এক পুলিশকর্তা।

Advertisement

পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনের সাব-স্টেশন তৈরির কাজ বন্ধ রাখার দাবিতে ভাঙড়ে গ্রামবাসীরা আন্দোলনে নেমেছিলেন জানুয়ারিতে। গোলমালের জেরে ওই বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় রাজ্য। গ্রামবাসীরা স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দিকে জমি দখলের অভিযোগ তোলেন। তার পর থেকেই ভাঙড়কে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক টানাপড়েন চলছে। স্থানীয় মানুষের সহানুভূতি পেতে প্রায় সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাই ভাঙড়ে ঘুরে গিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাচ্ছেন এই প্রথম। সেখানে বেশি লোক আনাটা তাই চ্যালেঞ্জ তৃণমূলের।

খামারআইট গ্রামের কাছে পাওয়ার গ্রিডের প্রকল্প যেখানে রয়েছে, তার কয়েকশো মিটার দূরে তপোবন মাঠ। হিসেব বলছে, সেখানে লক্ষাধিক লোক ধরে। ইতিমধ্যে বহু সভাও হয়েছে সেখানে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার জন্য সেখানে পুলিশ ঝুঁকি নেয়নি। কেন?

পুলিশের অন্দরের খবর, তপোবন মাঠের ধার ঘেঁষে রয়েছে দু’টি গ্রাম। খামারআইট ও মাছিভাঙা। যে গ্রাম দু’টি পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনের ‘আঁতুড়ঘর’ হিসেবে পরিচিত। এখনও সেখানে আত্মগোপন করে রয়েছেন নকশাল নেতারা। ফলে, সে দিন ওই মাঠে সভা হলে অশান্তির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। তাই সে পথে পা বাড়াননি পুলিশকর্তারা।

মুখ্যমন্ত্রীর সভা হবে বাসন্তী হাইওয়ে সংলগ্ন ভোজেরহাটের মাঠে। কিন্তু মাঠ ভরাতে তৃণমূলের সক্রিয়তা চিন্তায় ফেলেছে পুলিশকে। জেলা পুলিশের একটি সূত্র বলছে, সে দিন মিছিল হবে গুটিকয়েক। লোক আসবেন যানবাহনে। থাকবে পুলিশ, প্রশাসনের কর্তা ও নেতা-মন্ত্রীদের কয়েকশো গাড়ি। সুন্দরবন এলাকা থেকে দেড় হাজার খেলোয়াড়কে আনা হচ্ছে সভায়। ওই মঞ্চ থেকে সুন্দরবন গোল্ড কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা পুরস্কার দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু মাঠের পাশে গাড়ি রাখার জায়গা নেই। বাস-লরির জন্য বাসন্তী হাইওয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

এক পুলিশকর্তার আক্ষেপ, ‘‘এ হল মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নেতাদের পয়েন্ট বাড়ানোর প্রতিযোগিতা। আমরা হলাম রেফারি। কিন্তু হাতে লাল কার্ড রাখা যাবে না!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement