এই ছবিটিই হোয়াটসঅ্যাপে ব্যবহার করছেন রাজ্য পুলিশের বহু কর্মী।
দিল্লিতে পুলিশকর্মীদের ‘বিদ্রোহ’কে সমর্থন জানালেন এ রাজ্যের আইপিএসদের একটা বড় অংশ। মঙ্গলবার সকাল থেকেই ওই পুলিশকর্তারা তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকেদিল্লির বিক্ষোভকে সমর্থন জানিয়েপোস্ট করেছেন— ‘সমান বিচার পাওয়ার অধিকার, বক্তব্য শোনানোর অধিকার এবং সাম্যের অধিকার:পুলিশকর্মীদের এই দাবি জানানোর এটাই সঠিক সময়।’
ওই বক্তব্যের সঙ্গে #তিসহাজারি লিখে যে পুলিশ কর্তারা পোস্ট করেছেন, তাঁদের একটা বড় অংশই মনে করেন এ রাজ্যেও তাঁরা এমন পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন বার বার।এক পুলিশ কর্তা এ বছর হাওড়া আদালতের ঘটনার কথা মনে করিয়ে দেনবললেন,‘‘তিস হাজারিতে যা ঘটেছে, হাওড়াতেও তো ঠিক তাই হয়েছিল। পার্কিং নিয়ে গন্ডগোল। তার জেরে আইনজীবী বনাম হাওড়া পুরসভার কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে হামলার শিকার হন পুলিশকর্মীরা। প্রায় দেড় মাস বন্ধ থাকে রাজ্যের সব নিম্ন আদালত। ওই ঘটনাতেও পুলিশ হামলার সঙ্গে যুক্ত আইনজীবীদের বিরুদ্ধে বিশেষ কিছু ব্যবস্থা নিতে পারেনি।’’ অন্য এক পুলিশ কর্তা বললেন, ‘‘কেউ যদি মনে করেন তিনি আইনের ঊর্ধ্বে, তা হলে তো সমস্যা।”
কলকাতা পুলিশের এক অ্যাসিস্টান্ট কমিশনার (এসি) সম্প্রতি ভবানীপুরে রমেশ বহেল নামে এক প্রৌঢ়ের মৃত্যুর প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি বলেন,‘‘ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আলিপুর আদালতের এক আইনজীবী। তাঁকে ঘটনার পর গ্রেফতার করতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। অথচ আমরা প্রথম থেকেই জানতাম তিনি কোথায় রয়েছেন।” ওই আধিকারিক আরও বলেন, ‘‘কিন্তু গ্রেফতারির পরআলিপুর আদালতের গোটা বার অ্যাসোসিয়েশন ওই আইনজীবীর পক্ষে সওয়াল করতে নেমে পড়ে। ওই দিন জামিনও পেয়ে যান অভিযুক্ত আইনজীবী।’’জামিনের রায়ে অসন্তুষ্ট তদন্তকারীরা এর পরেই আবেদন জানাতে চান কলকাতা হাইকোর্টে। ওই অভিযুক্তের জামিনের আবেদন যাতে খারিজ করা হয়। কিন্তু সেই মামলা লড়ার মতো আইনজীবী খুঁজে পাননি তাঁরা। শেষ পর্যন্ত প্রায় এক মাস পরে, মঙ্গলবার হাইকোর্টে অভিযুক্ত আইনজাবী তড়িৎ শিকদারের জামিন নাকচ করার আবেদন জানিয়ে মামলা করতে পেরেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:রবীন্দ্র সরোবরে তালা ভেঙে ছটপুজো নিয়ে অভিষেকের উল্টো সুর ফিরহাদের গলায়
আরও পড়ুন:১৩ ঘণ্টা পরে আন্দোলন প্রত্যাহার করল দিল্লির বিক্ষুব্ধ পুলিশকর্মীরা, অপেক্ষা বিচারবিভাগীয় তদন্তের
রাজ্যের পুলিশ কর্তা এবং আধিকারিকরা এ দিন একের পর এক এ ধরনের উদাহরণ সামনে এনে জানাচ্ছেন, এ রাজ্যে তাঁরা কতটা কী আদৌ করতে পারবেন জানেন না, তবে তাঁদের সহকর্মীরা দিল্লিতে যে প্রতিবাদ করেছেন তা অবশ্যই হওয়া উচিত। এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘সমাজেরবাকিদেরও বোঝা উচিত যে, আমরাও মানুষ। আমাদের পরিবার আছে। আমাদেরও বিচার পাওয়ার অধিকার আছে।”