বিশ্বজিৎ দাস। — নিজস্ব চিত্র।
এখন তিনি কোন দলের? এই প্রশ্নের উত্তরে থমকে গেলেন বিজেপির বিধায়ক হয়েও তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস। প্রশ্ন শুনে প্রথমেই বলে ফেলেন, ‘‘আমি তৃণমূলের লোক।’’ কিন্তু সেটা বলা ঠিক হল কি না ভেবে খাড়া করলেন নয়া তত্ত্ব।
২০১৯ সালে তৃণমূলের তৎকালীন বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। এর পরে গত বিধানসভা নির্বাচনে উত্ত্র ২৪ পরগনার বাগদা আসন থেকে বিজেপির টিকিটে জেতেন। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের পর তৃণমূলের পতাকা হাতে নেন তিনি। সেই বিশ্বজিতের কাঁধেই বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছে তৃণমূল। বিশ্বজিতের এ হেন রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে মঙ্গলবার প্রশ্ন তোলেন সাংবাদিকরা। জবাবে মুচকি হেসে বাগদার বিধায়ক প্রথমে বলেন, ‘‘জন প্রতিনিধিদের কোনও দল হয় না। জন প্রতিনিধি সকলের।’’
বিষয়টি এখানেই থামেনি। বিজেপির বিধায়ক হয়েও বিশ্বজিৎ কী ভাবে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হলেন তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তখন তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের সভাপতি হলাম আমি তৃণমূলের... লোক।’’
গত ফেব্রুয়ারি মাসে মধ্যমগ্রামে জেলা তৃণমূলের দফতরে গিয়ে বৈঠক করতে দেখা গিয়েছিল বিশ্বজিৎকে। যদিও দফতর থেকে বেরিয়ে তিনি দাবি করেছিলেন, ‘‘বিজেপি-র টিকিটে জিতেছি। আমি বিজেপি-র বিধায়ক। বিজেপিতেই আছি।’’ মঙ্গলবার সেই কথা স্মরণ করাতেই বিশ্বজিতের নতুন ব্যাখ্যা, ‘‘জন প্রতিনিধিদের কোনও দল হয় না। জন প্রতিনিধি সকলের। জন প্রতিনিধিদের দলের সঙ্গে মেলালে হবে না। কারণ, এক জন বিধায়ক বা এক জন সাংসদের শংসাপত্র সিপিএম, বিজেপি, তৃণমূল, কংগ্রেস সকলের লাগে। সেখানে কোনও দল উল্লেখ করা থাকে না।’’
বিশ্বজিৎ যাঁর হাত ধরে বিজেপিতে গিয়েছিলেন এবং তৃণমূলে ফিরেছিলেন, সেই মুকুল রায়ও কোন দলের তা গুলিয়ে ফেলেন। কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক বিজেপির টিকিটে জিতে তৃণমূলে ফিরে যান। এর পরে একাধিক বার নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে তিনি বিজেপির না তৃণমূলের তা গুলিয়ে ফেলেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী অভিযোগে সরব হয়েছে বিজেপি। সেই হিসাবে প্রকাশ্যে বিজেপি বিধায়ক হিসাবেই পরিচয় দেওয়ার কথা তাঁর। যদিও সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিয়ে ফেরার পথে তিনি নিজেকে তৃণমূলের বলে পরিচয় দেন। সেই বিতর্কের মধ্যেই বিশ্বজিৎকে নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।