ভেঙে পড়া ফল্স নীচেই চলছে মেডিক্যাল ক্যাম্প। রবিবার বর্ধমান স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র
ভবন ভেঙে পড়ার স্মৃতি উস্কে ফের ছাদের অংশ খসে পড়ল বর্ধমান স্টেশনে। রবিবার সকালে স্টেশনে নতুন ভাবে তৈরি ভবনের ‘ফল্স সিলিং’-এর ফুট দেড়েক একটি অংশ ভেঙে পড়ে। এই ঘটনায় ‘শ্রমিক স্পেশাল’ ট্রেনে স্টেশনে আসা এক যুবক আহত হন বলে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ জানিয়েছে। যদিও তাঁদের কাছে কারও আহত হওয়ার খবর নেই বলে দাবি পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তীর। তিনি বলেন, ‘‘সম্ভবত জল চুঁইয়ে ‘ফলস সিলিং’-এর বোর্ড ফেঁপে গিয়েছিল। তা থেকেই দুর্ঘটনা ঘটেছে।’’ ডিআরএম (হাওড়া) ঈশাক খান বলেন, ‘‘ফাঁপা অংশগুলি সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বর্ধমানের ইঞ্জিনিয়ারেরা জানিয়েছেন, কোনও সমস্যা নেই। তা সত্ত্বেও ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ারকে (২) পরিদর্শন করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।’’ জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী জানান, ঘটনার রিপোর্ট নবান্নে পাঠানো হয়েছে।
জানুয়ারির গোড়ায় স্টেশনের প্রাচীন ভবনে মূল প্রবেশদ্বারের ঝুল বারান্দার একাংশ ভেঙে পড়েছিল। এক জনের মৃত্যু হয়। সংস্কার করে ভবনটি পুরনো চেহারায় ফিরিয়ে খুলে দেওয়া হয় মার্চের শুরুতে। এরই মধ্যে ভবনের ‘ফল্স সিলিং’ বেহাল হল কী করে? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্টেশনের কর্মীদের একাংশের দাবি, ছাদের নীচ দিয়ে পাইপলাইন গিয়েছে। কয়েক দিন বৃষ্টিতে ছাদের কোনেও জল জমেছিল। তা চুঁইয়ে ‘ফলস সিলিং’-এর বোর্ডে পড়ায় তা ফাঁপা হয়ে থাকতে পারে। লকডাউনে রক্ষণাবেক্ষণও বিশেষ হয়নি, দাবি কিছু কর্মীর। পুলিশ জানায়, আহত শ্রমিক সামিউল মণ্ডলের বাড়ি নাদনঘাটের সোনাপুরি গ্রামে। কেরল থেকে ফিরছিলেন তিনি। পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের অভিযোগ, ‘‘রেলের গাফিলতিতে এক পরিযায়ী শ্রমিক আহত
হলেন। ঐতিহ্যবাহী এই স্টেশনের সুরক্ষা নিয়ে রেল এত উদাসীন কেন?’’ বিজেপির জেলা সাংগঠনিক সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দীর বক্তব্য, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। রেলকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করব।’’