Bhangar

ফুটবল প্রতিযোগিতা জেতার আনন্দে ভাঙড়ে নিমন্ত্রিত দশ হাজার, পাত পেড়ে খেলেন বহু নেতাও

পাত পেড়ে খেতে দেখা গেল ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আরাবুল ইসলাম, সভাপতি বিশ্বজিৎ মণ্ডল, আরাবুলের ছেলে হাকিমুল ইসলাম-সহ ভাঙড়ের বহু তৃণমূল নেতাকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভাঙড়  শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:১৩
Share:

ভোজ: জয়ের আনন্দে ভুরিভোজ। ছবি: সামসুল হুদা

ফুটবল টুর্নামেন্ট জেতার আনন্দে হাজার দশেক মানুষকে পাত পেড়ে খাওয়ালেন পঞ্চায়েতের এক সদস্য। মঙ্গলবার ভাঙড়ের পাকাপোল বাজারের কাছে একটি মাঠে ভুরিভোজের আয়োজন করেছিলেন ভগবানপুর পঞ্চায়েতের সদস্য খয়রুল ইসলাম। সেখানে পাত পেড়ে খেতে দেখা গেল ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আরাবুল ইসলাম, সভাপতি বিশ্বজিৎ মণ্ডল, আরাবুলের ছেলে হাকিমুল ইসলাম-সহ ভাঙড়ের বহু তৃণমূল নেতাকে। বহু পুলিশ অফিসারও ছিলেন আমন্ত্রিতের তালিকায়।

Advertisement

শনি ও রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার নিউটাউনের বালিগড়িতে দু’দিনের ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছিলেন রাজারহাট নিউটাউনের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। টুর্নামেন্টে যোগদান করেছিল খায়রুল ইসলামের দল। কয়েকজন নাইজিরিয়ার খেলোয়াড় এবং এলাকার যুবকদের নিয়ে তৈরি হয়েছিল দল।

খায়রুলের ঘনিষ্ঠেরা কেউ কেউ জানালেন, দল তৈরিতেই লাখ দশেক টাকা খরচ করেছিলেন খায়রুল। উত্তর ২৪ পরগনার লস্করহাটি জোড়া ফুল সঙ্ঘকে ৩-২ গোলে হারিয়ে জয়ী হয়েছে সেই দল। একটি চারচাকা গাড়ি, ট্রফি মিলেছে।

Advertisement

সেই আনন্দেই খাসির মাংস, বিরিয়ানির ব্যবস্থা হয়েছিল। প্রায় ৭ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে পাকাপোল-লাউহাটি রোড এক সময়ে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। যানজট ছাড়াতে পুলিশকে নামতে হয়।

পঞ্চায়েত ভোটের আগে জনসংযোগ করতেই কি এই বিপুল আয়োজন?

আরাবুল বলেন, ‘‘ভোটের এখনও অনেক দেরি। সারা বছরই আমরা মানুষের সঙ্গে থাকি। মানুষের আবদার মেনে, জেতার আনন্দে একটু খাওয়া-দাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।’’

রাজ্য সরকার ইদানীং খরচে রাশ টানার চেষ্টা করছে। নেতাদেরও খরচ কমানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তারপরেও এই আয়োজনের টাকা এল কোথা থেকে? খায়রুলের জবাব, ‘‘সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেই সমস্ত খরচ করেছি। অতিরিক্ত কিছু করা হয়নি।’’ টাকা তিনি ব্যক্তিগত ভাবে খরচ করেছেন বলেই দাবি খায়রুলের।

বিষয়টি নিয়ে অবশ্য কটাক্ষ করছে বিরোধীরা। আইএসএফ নেতা তথা ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, ‘‘‘এই সরকার মেলা, খেলা নিয়েই মেতে আছে। কোনও গঠনমূলক চিন্তা-ভাবনা নেই। শাসকদলের অধিকাংশ নেতাই দুর্নীতিগ্রস্ত। দশ হাজার মানুষকে খাওয়ানোর জন্য এত টাকা কোথা থেকে জোগাড় হল? তোলাবাজি করেই এ সব চলছে।’’

দলের নেতাদের আমন্ত্রণে যে পুলিশ কর্তারা পাত পেড়ে খেলেন, তাঁদের কেউ অবশ্য এ নিয়ে মুখ খোলেননি। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, ‘‘এ সব সামাজিক অনুষ্ঠানে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের লোকজনকে ডাকা হয় অনেক সময়ে। কোনও রাজনৈতিক দলের ব্যানারে অনুষ্ঠান নয়। ফলে নিমন্ত্রণ রক্ষায় আসাই যায়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement