Train Cancellation in Sealdah

প্রবল ভিড়ের চাপে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু শিয়ালদহ মেন শাখায়, ‘অব্যবস্থা’ নিয়ে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা

মৃতের নাম মহম্মদ আলি হাসান আনসারি (২২)। তিনি টিটাগড়ের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের পুরানিবাজার এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্রে খবর, টিটাগড় ও খড়দহ স্টেশনের মাঝে ভিড়ের চাপে ট্রেন থেকে পড়ে যান।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

টিটাগড় শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৪ ১৩:২২
Share:

ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যু যুবকের। —নিজস্ব চিত্র।

ভিড়ে উপচে পড়া ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে শিয়ালদহ মেন শাখায় মৃত্যু হল এক যুবকের। মৃতের নাম মহম্মদ আলি হাসান আনসারি (২২)। তিনি টিটাগড়ের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের পুরানিবাজার এলাকার বাসিন্দা।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার সকালে শিয়ালদহ মেন শাখায় টিটাগড় ও খড়দহ স্টেশনের মাঝে ভিড়ের চাপে ট্রেন থেকে পড়ে যান। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে বিএন বসু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই আনসারিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘ছেলেটা টিটাগড় থেকে উঠেছিল। ভিতরেও ঢুকতে পারেনি, এত ভিড়! বাইরেই ঝুলছিল। হঠাৎ টিটাগড় আর খড়দহ স্টেশনের মাঝে কুষ্ঠ হাসপাতালের সামনেটায় পড়ে যায় ও। আমরাই ধরাধরি করে ওকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। পরিবারকে খবর দিয়েছিলাম।’’

হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে মৃতের পরিবার। হাসপাতালে ভাঙচুর চালানোরও অভিযোগ উঠেছে পরিবার ও পড়শিদের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় টিটাগড় থানার পুলিশ। হাসপাতালের সুপার অমিতাভ ভট্টাচার্য গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

Advertisement

লোকাল ট্রেন বাতিল থাকায় শুক্রবার সকাল থেকেই চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শিয়ালদহের মেন এবং বনগাঁ শাখার যাত্রীরা। একের পর এক স্টেশনে ভিড়ের ঠেলায় নাভিশ্বাস ওঠার অবস্থা। শহরতলির লোকাল ট্রেনের যাত্রিধারণ পরিকাঠামো বাড়ানোর কাজে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে রবিবার দুপুর ২টো পর্যন্ত শিয়ালদহ স্টেশনের ১ থেকে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মধ্যে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূর্ব রেল। বাতিল করা হয়েছে বেশ কিছু লোকাল। এর জেরেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ, কোন কোন ট্রেন বাতিল থাকবে, তা রেলের তরফ থেকে স্পষ্ট করে কিছু না বলায় এই হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। ব্যস্ত সময়ে ট্রেন না পাওয়ায় গন্তব্যে পৌঁছতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে সকাল থেকেই। যাত্রীদের দাবি, ট্রেন বাতিল সংক্রান্ত কোনও ঘোষণা হচ্ছে না স্টেশনে। এমনকি, কোন ট্রেন কত দেরিতে চলছে তা নিয়েও কোনও তথ্য দিচ্ছে না রেল। এর ফলেই সমস্যা আরও বেড়েছে।

যাত্রীদের একাংশের প্রশ্ন, কেন বার বার শিয়ালদহ শাখায় এ ভাবে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে? মাস কয়েক আগেই দমদম স্টেশনে ইন্টারলকিং কাজের জন্য প্রায় টানা দু’দিন ট্রেন চলাচল কার্যত বন্ধ ছিল শিয়ালদহ মেন এবং বনগাঁ শাখায়। সেই সময় এই কাজ করা হয়নি কেন, প্রশ্ন তুলছেন যাত্রীরা। তা ছাড়া করোনার সময় প্রায় সকলেই যখন ঘরবন্দি অবস্থায় ছিলেন, ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল, তখন কেন এই কাজ করার কথা মনে পড়েনি রেলের? বনগাঁ শাখায় নিত্য যাতায়াত করা এক যাত্রীর একাংশের কথায়, ‘‘এত বড় করোনাকাল গেল, তখন এই প্ল্যাটফর্ম বৃদ্ধির কথা ভাবা হয়নি কেন? দীর্ঘ দিন তো যাত্রী পরিষেবা বন্ধ ছিল। সেই সময় এই কাজ করা যেত না? এমন তো নয়, সেটা খুব বেশি দিন আগের কথা। ১২ কামরার ট্রেন যে শিয়ালদহের সব প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়তে পারে না, সেটা তো রেল কর্তৃপক্ষ তখনও জানতেন। শিয়ালদহের ভিতরের চত্বরের ভোল তো তখন পাল্টানো হয়েছে। কিন্তু এই কাজ করা হয়নি। এখন বার বার পরিষেবা বন্ধ করে কেন এই সব কাজ করছে রেল?’’

রেলের তরফে পরিষেবা সংক্রান্ত সমস্ত বিষয় জানানোর কথা পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্রের। কিন্তু তিনি বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত জানাতে পারেননি, কোন কোন ট্রেন বাতিল বা যাত্রাপথ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। শুক্রবার সকালে তিনি বললেন, “মাত্র পাঁচটি প্ল্যাটফর্ম বন্ধ। ৬ থেকে ১৪ নম্বর দিয়ে আমরা ট্রেন চালাচ্ছি। যাত্রীদের সামান্য সমস্যা হচ্ছে। তবে আমরা অতিরিক্ত মেট্রো চালাচ্ছি। যে সব ট্রেন শিয়ালদহ থেকে ছাড়ছে, সবই ১২ কামরার। একটু ধৈর্য ধরার অনুরোধ করছি। রেল সব সময় যাত্রীদের পাশে আছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement