.
২০০৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় এসে সিঙ্গুরে ন্যানো প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সেই মতো রাজ্য সরকার সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু করে। কিন্তু, অনেকেই জমি দিতে অস্বীকার করেন। সেই অনিচ্ছুক চাষিদের পাশে দাঁড়িয়ে বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনে নামে সেই সময়কার বিরোধী দল তৃণমূল। ধারাবাহিক সেই আন্দোলনের জেরে অনেক টানাপড়েনের পর টাটা গোষ্ঠী এ রাজ্য থেকে তাদের ন্যানো প্রকল্প তুলে নেয়। ২০১১ সালে এই সিঙ্গুর আন্দোলনে ভর করেই রাজ্যের মসনদে বসার পথ প্রশস্ত করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তৃণমূল সরকারের প্রথম কাজই ছিল সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক চাষিদের জমি ফেরত দিতে আইন তৈরি করা। মমতার মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে প্রথম সিদ্ধান্ত ছিল এটাই। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত আটকে যায় আইনের ফাঁসে। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ আইন বৈধ বললেও তা খারিজ করে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। তার পর মামলা যায় সুপ্রিম কোর্টে। ২০১২-র জুনে জমি ফেরানো স্থগিত রাখতে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সেই থেকে ঝুলে রয়েছে মামলা। আজ সেই মামলার রায় ঘোষণা হবে। বুদ্ধ থেকে মমতা, বাম থেকে তৃণমূল, হাইকোর্ট থেকে শীর্ষ আদালত— কবে কী হয়েছিল সেই সালতামামি দেখে নেওয়া যাক এক ঝলকে।
১৮ মে, ২০০৬
রতন টাটা এবং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সিঙ্গুরে ন্যানো প্রকল্পের ঘোষণা করলেন।
২০ সেপ্টেম্বর, ২০০৬
রাজ্য সরকার এবং টাটা গোষ্ঠী কারখানা তৈরির জন্য সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণ করল।
২৮ ডিসেম্বর, ২০০৬
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৫ দিন পর অনশন ভাঙলেন।
৯ মার্চ, ২০০৭
জমি হাতে পেল টাটা মোটর্স।
১০ জানুয়ারি, ২০০৮
নয়াদিল্লির ‘অটো শো’তে ন্যানো প্রকাশ্যে এল।
১৮ জানুয়ারি, ২০০৮
কলকাতা হাইকোর্ট জমি অধিগ্রহণে অনুমোদন দেয়।
২৭ জুন ২০০৮
সিঙ্গুরে ন্যানো কারখানার গেট ভাঙলেন আন্দোলনকারীরা।
১৯ অগস্ট, ২০০৮
৪০০ একর জমি অনিচ্ছুকদের ফেরাতেই হবে, ঘোষণা মমতার।
২০ অগস্ট, ২০০৮
রাজভবনে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক ব্যর্থ।
২৪ অগস্ট, ২০০৮
সিঙ্গুরে হাইওয়ের উপর অনির্দিষ্টকাল অবস্থান শুরু করলেন মমতা।
টাটারা চলে যাওয়ার পর সিঙ্গুরের ন্যানো কারখানা
৩ অক্টোবর, ২০০৮
সিঙ্গুরে ন্যানো প্রকল্প থেকে সরে গেল টাটা গোষ্ঠী।
১৩ মে, ২০১১
রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় এল তৃণমূল কংগ্রেস।
৯ জুন, ২০১১
সিঙ্গুরের কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য অর্ডিন্যান্স জারির ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিধানসভায় সিঙ্গুর বিল পাশের পর সিঙ্গুরে উচ্ছ্বাস
১৩ জুন, ২০১১
বিধানসভায় ‘সিঙ্গুর বিল’ পাশ হল।
২০ জুন, ২০১১
রাজ্যপাল বিলে সই করলেন।
২১ জুন, ২০১১
সিঙ্গুরের জমি রাজ্য সরকার দখল করল।
২২ জুন, ২০১১
‘সিঙ্গুর আইন’কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে গেল টাটা মোটর্স। সরকারি নির্দেশে স্থগিতাদেশ চাইল তারা।
২৭ জুন, ২০১১
কলকাতা হাইকোর্ট টাটাদের আর্জি খারিজ করল। অর্ডিন্যান্সে স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল টাটা মোটর্স কর্তৃপক্ষ।
২৮ জুন, ২০১১
সকালে জমি জরিপ শুরু হলেও, সন্ধ্যায় জমির কাগজ-পত্র হস্তান্তর হল।
২৯ জুন, ২০১১
সুপ্রিম কোর্ট সিঙ্গুরের কৃষকদের জমি ফেরত না দেওয়ার নির্দেশ দিল রাজ্য সরকারকে।
৩১ অগস্ট, ২০১৬
সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়, ‘২০০৬ সালে সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণ অবৈধ’।
আরও খবর- সিঙ্গুর: জমি বিবাদের দলিল