মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
সংগঠন পরিচালনায় জেলা ভিত্তিক পর্যবেক্ষক-ব্যবস্থা তুলে দিল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার বদলে ২১ সদস্যের একটি কোঅর্ডিনেশন কমিটি ও তার উপরে সাত সদস্যের একটি স্টিয়ারিং কমিটি তৈরি করে দিয়েছেন তিনি।
আগেকার পর্যবেক্ষকরা প্রায় সকলেই সমন্বয় কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন। তবে আলাদা করে কারও হাতে কোনও জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। সমন্বয় কমিটি থেকেই তৈরি হয়েছে সাত সদস্যের স্টিয়ারিং কমিটি।
এদিন মমতা যে ধাঁচে সাংগঠনিক কাঠামো গড়লেন তাতে এখন স্টিয়ারিং কমিটিই থাকবে সবার উপরে। তার উপরে শুধুই তৃণমূলনেত্রী। দলের এক সূত্রের দাবি, এই কমিটি মমতা বাছাই করেছেন অভিজ্ঞতা এবং সাংগঠনিক দক্ষতার মেলবন্ধন ঘটিয়ে। তাই এখানে সুব্রত বক্সী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গেই আছেন শুভেন্দু অধিকারী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। পাহাড়ের প্রতিনিধি হিসেবে রাখা হয়েছে সাংসদ শান্তা ছেত্রীকে। অন্যদিকে সমন্বয় কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে উত্তরবঙ্গের পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে থাকা অরূপ বিশ্বাসকে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা, সাত সদস্যের স্টিয়ারিং কমিটি করে মমতা আসলে নির্বাচনের আগে দলের রাশ নিজের হাতে কেন্দ্রীভূত করতে চান। বৃহস্পতিবার দলের ভিডিয়ো-বৈঠকে মমতা জানিয়েছেন, এই সমন্বয় কমিটি গোটা রাজ্যে সামগ্রিকভাবে দলের কাজ দেখবে। সেই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে স্টিয়ারিং কমিটি। পর্যবেক্ষক-ব্যবস্থা নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও এদিনের বৈঠকে মমতা বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী আমি ঠিক করিনি। স্থানীয়ভাবে প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে। তাতে অনেক ভুল ছিল।’’ দলনেত্রীর এই মন্তব্য ও এ দিনের বৈঠকে সাংগঠনিক পদক্ষেপ সম্পর্কে তৃণমূলের এক শীর্ষনেতা বলেন, ‘‘বিধানসভার প্রার্থী বাছাই থেকে ভোট পরিচালনার কাজে সামগ্রিকভাবে নজর রাখতে চাইছেন নেত্রী নিজে।’’
দলের যুব সংগঠনেও একাধিক পরিবর্তন করা হয়েছে। কলকাতা উত্তর ও দক্ষিণে দুই যুব সভাপতিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ কলকাতার সভাপতি মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভাই স্বরূপের বদলে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তকে। আর উত্তরে জীবন সাহার বদলে দায়িত্ব পেয়েছেন অনিন্দ্য রাউত। উত্তর ২৪ পরগনার যুব সভাপতি করা হয়েছে দেবরাজ ঘোষকে।