কুরবান খুনে ধৃত ৫, মূল অভিযুক্ত অধরা

গত ৭ অক্টোবর নিজের অফিসে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন কুরবান। তাতে স্থানীয় বিজেপি নেতা আনিসুর রহমান-সহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৯ ০২:১৬
Share:

তমলুক আদালত চত্বরে ধৃতেরা।

রাতে এক বিবৃতি দিয়ে সোমবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন পুলিশ সুপার। বিষয় অবশ্য খোলসা করা হয়নি। এ দিন সেই বৈঠক বাতিল হয়। কিন্তু এ দিনই সামনে এসেছে জেলার সাম্প্রতিক সময়ে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি হত্যাকাণ্ডের তদন্তের গতিপ্রকৃতি।

Advertisement

জেলা পুলিশ জানিয়েছে, পাঁশকুড়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ- সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা কুরবান শা খুনে তারা পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে রয়েছে একজন শ্যুটার-ও। ওই খুনের ঘটনায় ধৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৬।

গত ৭ অক্টোবর নিজের অফিসে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন কুরবান। তাতে স্থানীয় বিজেপি নেতা আনিসুর রহমান-সহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। শেখ খালেক আহমেদ নামে এক জনকে ৯ অক্টোবর গ্রেফতার করে পুলিশ। দিন তিনেক আগে মাইশোরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তারা আরও পাঁচজনকে আটক করে। তার মধ্যে দু'জনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও এ দিন গ্রেফতার করা হয় নিশীথ পাল, নবারুণ মিশ্র ও দীপক চক্রবর্তী নামে বাকি তিনজনকে।

Advertisement

এছাড়া, গত শনিবার পাঁশকুড়া বাজার এলাকা থেকে পুলিশ আটক করে আনিসুর ঘনিষ্ঠ বিজেপির গোবিন্দনগর অঞ্চলের শক্তি কেন্দ্র প্রমুখ মলয় ঘোষকে। এ দিন তাকে এবং খড়গপুর থেকে তসলিম আরিফ ওরফে রাজা নামে আর এক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশের একটি সূত্রের খবর, চার শ্যুটারের মধ্যে রাজা একজন। এ দিন সকালে পাঁশকুড়া থানায় ডেকে পাঠানো হয় ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের। তাদের এক একজনকে আলাদা আলাদাভাবে দেখানো হয় রাজাকে। প্রত্যকেই তাকে শনাক্ত করতে পারে বলে খবর।

ধৃতদের এদিনই তমলুক আদালতে তোলা হয়। রাজা বাদে বাকি চার জনের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। রাজার টিআই প্যারেডের জন্য আবেদন জানানো হয় পুলিশের তরফে। তা মঞ্জুর করেন বিচারক। আগামিকাল, বুধবার রাজার টিআই প্যারেড হবে। তদন্তকারী অফিসার অজয়কুমার মিশ্র বলেন, ‘‘টিআই প্যারেডের পর রাজাকে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানাব।’’ ধৃতদের মোবাইল ফোনগুলি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।

ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারিতে পুলিশি তদন্ত নিয়ে কিছুটা আশ্বস্ত কুরবানের পরিবার। কুরবানের দাদা আফজল শা বলেন, ‘‘পুলিশের তদন্তে এখন আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। তবে যতদিন না মূল অভিযুক্ত ধরা পড়ছে ততদিন আমাদের শান্তি নেই।’’ উল্লেখ্য, আনিসুর-সহ অভিযোগে নাম থাকা চারজনকে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ।

ধৃত রাজা বাদে বাকি চারজন আনিসুর রহমানের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের। ধৃত নিশীথ মাইশোরা অঞ্চল তৃণমূলের প্রাক্তন সম্পাদক। দীপক এবং নবারুণ খাতায় কলমে তৃণমূল করলেও তারা বিজেপি নেতা আনিসুরের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি মাইশোরা অঞ্চল তৃণমূল নেতৃত্বের। তৃণমূলের মাইশোরা অঞ্চল সভাপতি স্বপন খাঁড়া বলেন, ‘‘মাইশোরা থেকে ধৃত তিনজন আমাদের দলে থেকেও বিজেপি নেতা আনিসুরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত বলে আমাদের ধারণা ছিল। ওদের গ্রেফতারির পর তা সত্যি প্রমাণিত হল।’’

পুলিশ সুপার ভি সলোমন নেসাকুমার বলেন, ‘‘রাজাই গুলি চালিয়েছিল। জেরায় সে তা স্বীকারও করেছে। ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ আরও কয়েক জনের নাম উঠে এসেছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’ রাজনৈতিক কারণেই কি এই খুন? পুলিশ সুপারের জবাব, ‘‘এখনই এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলছি না। তদন্ত শেষ হলে সব জানানো হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement