প্রতীকী ছবি।
বর্ধিত সময় ধরে ভোটার তালিকা সংশোধন, সংযোজন ও পরিমার্জনের জন্য ধার্য হয়েছিল মোট ৭৬ দিন। ছুটিছাটা বাদ দিয়ে কাজের দিনের সংখ্যা দাঁড়ায় ৬০। তার মধ্যেই নতুন ভোটার হতে চেয়ে রাজ্যে জমা পড়েছে ৩৬ লক্ষ আবেদনপত্র!
রাজ্যের সিইও বা মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের দফতর ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য প্রথমে ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল। পরে তা বাড়িয়ে ১৫ নভেম্বর করা হয়। সব মিলিয়ে ৭৬ দিন সময়সীমা হলেও উৎসবের ছুটির জন্য ৬০ দিন কাজ হয়েছে। তাতেই এই বিপুল সংখ্যক আবেদন এসেছে।
ভোটার তালিকা সংশোধনের সময়সীমা বাড়াতে রাজনৈতিক দলগুলি প্রথম থেকেই দাবি জানাচ্ছিল। কারণ, মানুষ উৎসবে ব্যস্ত থাকায় নাম তুলতে সমস্যা হবে বলে জানিয়েছিল তারা। প্রথমে ধার্য ৬১ দিনের মধ্যে আবেদনপত্রের হার সন্তোষজনক না-হওয়ায় আরও ১৫ দিন সময় দেওয়া হয় বলে বিভিন্ন মহল থেকে জানানো হয়েছিল। তবে সেই বক্তব্য খারিজ করে সিইও দফতরের কর্তারা বলেন, ‘‘কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুসারেই তালিকায় নাম তোলার সময় বাড়ানো হয়েছে।’’
নতুন ভোটারদের আবেদনের সংখ্যা নিয়ে সিইও দফতরের কর্তারা সন্তুষ্ট। তাঁদের মতে, প্রত্যাশা অনুযায়ী আবেদনপত্র জমা পড়েছে। এ ক্ষেত্রে শেষ বছরের সমীক্ষার কথা তুলছেন তাঁরা। কমিশনের নির্দেশ অনুসারে ভাবী ভোটারদের (১৪-১৭ বছর বয়স) বিষয়ে সমীক্ষা করা হয়। সেই সমীক্ষা অনুযায়ী এই আবেদনপত্র ‘স্বাভাবিক’ বলে সিইও দফতরের কর্তাদের অভিমত। আবেদনপত্রের সংখ্যার নিরিখে অন্যদের পিছনে ফেলেছে দুই ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ। তবে সিইও দফতরের কর্তাদের মতে, বড় জেলায় বেশি আবেদনপত্র জমা পড়ে। ছোট জেলায় কম হয়। এর মধ্যে অন্য কোনও তাৎপর্য নেই।
কোনও আবেদনপত্রের ক্ষেত্রে সংশয় তৈরি হলে তা নিয়ে একাধিক বার পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিল কমিশন। সে-ভাবেই সব কাজ হয়েছে বলে দাবি সিইও দফতরের কর্তাদের। সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে বাড়তি নজর ছিল কমিশনের।
চলতি বছরে আড়াই মাসের সময়সীমা থাকলেও ২০১৭ সালে তা ছিল ২১ দিন। আর তাতে আবেদন পড়েছিল ৩০ লক্ষ। রাজ্যে এখন ৭৮,৭৯৯টি বুথ রয়েছে। চলতি বছরের ৩০ অগস্ট পর্যন্ত রাজ্যে ভোটারের সংখ্যা প্রায় ছ’কোটি ৮০ লক্ষ। চলতি বছরের ভোটার তালিকায় নাম তোলার ক্ষেত্রে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ভোটারদের বিষয়ে বাড়তি জোর দেওয়া হয়েছিল।
জমা পড়া আবেদনপত্রের ভিত্তিতে ভাবী ভোটারদের নিয়ে শুনানি শুরু হয়েছে। সেই কাজের শেষে আগামী ৪ জানুয়ারী নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশিত হওয়ার কথা। তবে ভোটের কিছু দিন আগে পর্যন্ত আগ্রহীরা ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য আবেদন করতে পারবেন বলে কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে।