এ বার রাজ্যের তিন প্রশিক্ষণরত আইপিএস অফিসারকে মারধরের অভিযোগ উঠল রেলরক্ষী বাহিনী বা আরপিএফ ও রেলকর্মীদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি শিয়ালদহ স্টেশনের। শিয়ালদহ রেল পুলিশ থানায় বুধবারের ওই ঘটনা নিয়ে একটি অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। যার ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে রেল পুলিশ। পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষও অনুসন্ধান শুরু করেছেন।
শিয়ালদহ রেল পুলিশ বা জিআরপি অভিযুক্ত দুই আরপিএফ জওয়ান ও এক রেলকর্মীর ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু শনিবার পর্যন্ত কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, আরপিএফ বা রেল রক্ষী বাহিনী কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা। আর এই ঘটনাটির তদন্ত করছে রাজ্য সরকারের অধীনস্থ রেল পুলিশ।
এর আগে গত নভেম্বরে লোকাল ট্রেনের মহিলা কামরায় ওঠার ‘অপরাধে’ এক ব্যাক্তিকে ধাক্কা মেরে ফেলে খুনের অভিযোগ উঠেছিল আরপিএফের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার কিছু দিন আগে আরপিএফের বিরুদ্ধেই বিধাননগর স্টেশনে এক সরকারিকর্মীকে বেআইনি ভাবে আটকে রেখে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল।
রেল পুলিশ সূত্রের খবর, যে তিন জন প্রশিক্ষণরত আইপিএস অফিসার অভিযোগ জানিয়েছেন, ২০১৪ ব্যাচের সেই সায়ক দাস, বিশপ সরকার ও প্রিয়ব্রত রায় সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদায় আছেন। এখন ব্যারাকপুরের পুলিশ ট্রেনিং কলেজে তাঁরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
প্রশিক্ষণরত সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে সায়ক কোচবিহারে, বিশপ উত্তর দিনাজপুরে ও প্রিয়ব্রত জলপাইগুড়িতে কর্মরত ছিলেন।
দার্জিলিং মেলে বুধবার সকালে তাঁরা শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছন। শুধু মালপত্র রাখার জন্য নির্দিষ্ট, ট্রেনের লাগেজ ভ্যানে তিন জনের জিনিসপত্র ভর্তি বাক্স রাখা ছিল। তদন্তকারীরা জানান, শিয়ালদহ স্টেশনে ট্রেন পৌঁছনোর পর ওই তিন আইপিএস অফিসার লাগেজ ভ্যানের দায়িত্বে থাকা রেলকর্মীদের কাছে তাঁদের জিনিসপত্র বার করে দিতে অনুরোধ করেন। রেলকর্মীরা তাঁদের জানান, যে সব জিনিসপত্র ‘বুক’ করে লাগেজ ভ্যানে রাখা, সেগুলো এই ভাবে সরাসরি তুলে দেওয়া যায় না। রেলের নিয়ম অনুযায়ী, ওই জিনিস পেতে বুকিং অফিসে যেতে হবে।
অভিযোগ দায়ের করা ওই তিন প্রশিক্ষণরত আইপিএস অফিসার জানিয়েছেন, এর পরে তাঁরা বুকিং অফিসে গেলে সেখানে তাঁদের সঙ্গে বচসা শুরু করেন আরপিএফ ও রেলকর্মীরা। তবে তদন্তকারীদের বক্তব্য, ওই তিন জন নিজেদের পরিচয় দিয়ে নিজেদের বাক্স আগে পেতে চেয়েছিলেন। এই নিয়ে বচসা শুরু হয়। প্রশিক্ষণরত আইপিএস অফিসারদের দাবি, সেই সময়ে রেলের পার্সেল বিভাগের এক কর্মী ও আরপিএফের দুই জওয়ান তাঁদের ওপর চড়াও হন ও তিন জনকে বেধড়ক মারতে থাকেন।
আরপিএফের একটি সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, রাজ্য পুলিশের ওই তিন অফিসার অন্যায় ভাবে জোর করে অতিরিক্ত সুবিধে আদায় করতে চাইছিলেন। কিন্তু তাতে রেলকর্মীরা বাধা দেন। আরপিএফের বক্তব্য, ওই তিন অফিসার রেলের নিয়ম মানতে চাইছিলেন না।
পূর্ব রেলের মুখপাত্র রবি মহাপাত্র এ দিন বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যা বলা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখে নিয়ম মাফিক যা করার, রেল করবে।’’