ডায়মন্ড হারবারের স্কুলছাত্রী আয়েশার দুর্দশায় মূল অভিযুক্তদের শ্রীঘরে পুরতে সময় লেগেছিল অনেক। মালদহের তরুণী অনামিকাকে পাচারের ঘটনায় অবশ্য এক মহিলা-সহ দুই অভিযুক্তকে বেশ তাড়াতাড়িই গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ। দু’জনেই আদতে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। গ্রেফতার করা হয়েছে অনামিকাকে বেদম মারধরে অভিযুক্ত গৃহকর্তাও। তাঁর বাড়িতে কাজ করতে গিয়েই লাঞ্ছিত হন অনামিকা।
দিল্লির বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অনামিকার শারীরিক অবস্থা এখনও জটিল বলে সোমবার সেখানকার ডাক্তারদের সূত্রে জানা গিয়েছে। দিল্লি পুলিশ সূত্রের খবর, পাচার চক্রে যুক্ত সন্দেহে ধৃত দু’জনের নাম সরস্বতী ও গণেশ বর্মন। সরস্বতীর বাড়ি মালদহের বামনগোলায়। ওই মহিলাই কাজের টোপ দিয়ে দু’বছর আগে অনামিকাকে মালদহ থেকে দিল্লি নিয়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। গণেশ দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা হলেও তাঁর যথাযথ ঠিকানা এখনও মেলেনি।
হাত-পা, চোখমুখ-সহ সর্বাঙ্গে অজস্র ক্ষত নিয়ে অনামিকাকে উদ্ধার করা হয় গত শুক্রবার। প্রথমে তাঁর চিকিৎসা চলছিল দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে। নিরাপত্তার কারণে রাজধানীর মহিলা কমিশন পরে তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সরিয়ে নিয়ে যায়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, সরস্বতী-গণেশদের চক্রে আরও অনেকে যুক্ত। ওই চক্রের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ থেকে অন্তত ৭০ জন নাবালিকা ও তরুণীকে দিল্লি এবং অন্যান্য রাজ্যে পাচার করা হয়েছে। পাচারে অভিযুক্ত ওই দু’জন এবং মারধরে অভিযুক্ত গৃহকর্তাকে গ্রেফতারের পাশাপাশি পুলিশ দিল্লির মুখার্জিনগরের একটি ‘প্লেসমেন্ট এজেন্সি’র অফিসেও তল্লাশি চালিয়েছে। সেখানে এমন কিছু নথি মিলেছে, যা থেকে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, এ রাজ্য থেকে মেয়েদের নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন কাজে লাগানোর নামে এরা আসলে তাঁদের বিক্রি করে দিত। অনামিকার ক্ষেত্রে সেটাই করা হয়েছিল। এই ধরনের দুষ্কর্মে সরস্বতী-গণেশের সঙ্গে আর যারা ছিল, ধৃতদের জেরার ভিত্তিতে তাদের খোঁজ চলছে।