প্রতীকী ছবি।
গ্রামের সকলেই তাঁকে একডাকে ‘ভাল মেয়ে’ বলে চিনতেন। পড়াশোনার পাট চোকানোর পর দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁর জন্য পাত্রের খোঁজ চলছিল। বিয়ের জন্য মেয়ের একটিই ‘শর্ত’ ছিল— পাত্রকে সরকারি চাকুরিজীবী হতে হবে! তবে ‘শর্তপূরণ’ না হওয়ায় কোনও পাত্রকেই মনে ধরছিল না বছর ছাব্বিশের মেয়েটির। বৃহস্পতিবার সকালে গলায় ফাঁস লাগিয়ে সে মেয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেন বলে তাঁর পরিবারের দাবি। মুর্শিদাবাদের কান্দিতে সে মেয়ের ‘আত্মঘাতী’ হওয়ার কথা শুনে প়ড়শিদের দাবি, সরকারি চাকুরিজীবী পাত্র না মেলায় মানসিক অবসাদে আত্মহত্যা করেছেন শিল্পী ঘোষ।
পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ কান্দির খড়গ্রামের গুরুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা শিল্পী ঘোষের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান বলে জানিয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তাঁরাই খড়গ্রাম থানায় খবর দেন। পুলিশ আধিকারিকেরা গলায় গামছার ফাঁসে শিল্পীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেন। এর পর স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে শিল্পীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
কান্দি মহকুমা হাসপাতাল মর্গে শিল্পীর দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শিল্পী আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছে তাঁর পরিবার। এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে খড়গ্রাম থানা।
দাদার একমাত্র মেয়ের মৃত্যুতে হতবাক শিল্পীর কাকা সঞ্জীব মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করার পর থেকেই শিল্পীর জন্য পাত্রের খোঁজ করছিলেন দাদা। তবে জমিজায়গা, টাকাপয়সা রয়েছে, এমন পাত্রদের দেখাশোনা করা হলেও সরকারি চাকুরিজীবী পাত্র ছাড়া বিয়েতে রাজি হয়নি শিল্পী।’’ এই ঘটনার কথা শোকাহত শিল্পীর গ্রামের বাসিন্দা চন্দন ঘোষও। তাঁর দাবি, কোনও প্রেমঘটিত সম্পর্ক ছিল না শিল্পীর। চন্দনের কথায়, ‘‘শিল্পী আমার বোনের মতো ছিল। গ্রামের সকলে ওকে একডাকে ভাল মেয়ে বলে চেনে। ওর বিরুদ্ধে গ্রামের কারও কোনও অনুযোগ পর্যন্ত নেই। অনেক দিন ধরে পর পর বিয়ের জন্য দেখাশোনা চললেও সরকারি পাত্র ছাড়া বিয়ে করতে রাজি হয়নি শিল্পী। হয়তো সে জন্য ওর মানসিক চাপ বাড়ছিল। হয়তো চেয়েছিল, বিয়ের পর ভাল ভাবে থাকবে। তবে কপালে না থাকলে যা হয়!’’