গরু পাচারে বাধা দেওয়ায় বাংলাদেশি দুষ্কৃতী এবং বিএসএফের গোলাগুলিতে জখম হন বিএসএফের এক জওয়ান এবং এক বাংলাদেশি পাচারকারী। পাচারকারীদের কাছ থেকে ২২টি গরু আটক করা হয়েছে। রবিবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাটের ইটিন্ডার সীমান্তবর্তী পানিতর গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, আহত জওয়ান টি বালুকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাংলাদেশের সাথক্ষিরার বাসিন্দা গরু পাচারকারী লিটন মোল্লাকে প্রথমে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখান থেকে তাকে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সীমান্ত পেরিয়ে আসা দুষ্কৃতীদের খোঁজে সীমান্তরক্ষী এবং পুলিশ যৌথ তল্লাশি শুরু করেছে।
সম্প্রতি গরু পাচারে বাধা দেওয়ায় স্বরূপনগর সীমান্তে পাহারারত ১৪৪ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের এক জওয়ানকে গুলি করে খুন করেছিল বাংলাদেশি পাচারকারীরা। মাস কয়েক আগে স্বরূপনগর সীমান্তে আরও এক জওয়ান বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন। গরু পাচারে বাধা দেওয়ায় স্বরূপনগরের কয়েকটি বিএসএফ চৌকি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পাচারে বাধা দেওয়ায় মহিলাদের অপহরণ এবং ধর্ষণের মত একাধিক ঘটনাও ঘটেছে। বাংলাদেশিদের হাতে বারে বারে সীমান্তরক্ষীরা আক্রান্ত হওয়ায় সীমান্তে পাহারাও বাড়ানো হয়েছে।
বিএসএফ এবং পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোরে কুয়াশার মধ্যে চৌকি থেকে বিএসএফের ১৪৪ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের আধিকারিক নাইট ভিশন ক্যামেরায় অনেক সংখ্যক গরু নিয়ে কাঁটাতারের পাশে দুষ্কৃতীদের জড়ো হতে দেখেন। তখনই জওয়ানদের সতর্ক করে দেন তিনি। ওই সময়ে কাঁটাতারের পাশে পাহারায় ছিলেন বিএসএফের কনস্টেবল টি বালু। পাচারে বাধা দিলে দুষ্কৃতীরা দা, বল্লম, লাঠি নিয়ে তাঁর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দুষ্কৃতীদের লাঠির আঘাতে লুটিয়ে পড়েন ওই জওয়ান। তাঁর সঙ্গীরা এগিয়ে এলে দুষ্কৃতীরা তাঁদের লক্ষ করেও বোমা ছুড়তে থাকে। বেগতিক বুঝে আত্মরক্ষার খাতিরে জওয়ানেরা পাল্টা গুলি ছুড়তে থাকেন।
দু’পক্ষের মধ্যে কিছু ক্ষণ সংঘর্ষের পর বিপদ বুঝে দুষ্কৃতীদের কয়েক জন পানিতরেই লুকিয়ে পড়ে। বাকিরা গরু ফেলে বাংলাদেশের দিকে পালায়। বিএসএফ সূত্রের খবর, কুয়াশা সরে রোদ ওঠার পরে তল্লাশি চালিয়ে খালের ধারে গর্তের মধ্যে থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় এক জনকে উদ্ধার করেন জওয়ানেরা। জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে জানা যায়, আহত ব্যক্তি লিটন মোল্লা গরু নিয়ে যাওয়ার জন্য পাচারকারীদের সঙ্গে এ পারে এসেছিল। প্রসঙ্গত, সীমান্তে গুলি ছোড়ার উপরে বিধি নিষেধ থাকার কারণে এলএমজি কাঁধে থাকলেও জওয়ানেরা আত্মরক্ষায় বাঁশের চটার ঢাল এবং মাথায় ক্রিকেট খেলার হেলমেট নিয়ে পাহারা দিচ্ছিলেন। বারে বারে এ ধরনের ঘটনায় সীমান্ত এলাকায় সুরক্ষার জন্য কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।