পাকা হওয়ার কথা এই রাস্তাটি। নিজস্ব চিত্র।
অবশেষে সম্প্রসারণ ও পিচের নির্মাণ কাজের শিলান্যাস হল বনগাঁ মহকুমার গোপালনগর থানা এলাকার পোলতা থেকে পাল্লা পর্যন্ত ঝামা ইটের রাস্তার।
দীর্ঘ দিন ধরে এলাকাবাসী এই দাবিতে বিভিন্ন মহলে স্মারকলিপি তো দিয়েছিলেনই, চালিয়ে গিয়েছিলেন আন্দোলনও। সোমবার শিলান্যাস করেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি রহিমা মণ্ডল। এই উপলক্ষে বনগাঁ-চাকদহ সড়কের পাশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সভাধিপতি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক বিশ্বজিত্ দাস, প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ, বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি সৌমেন দত্ত ও স্থানীয় গোপালনগর-২ পঞ্চায়েতের প্রধান কাজল মণ্ডল।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার থেকে পিচ ঢেলে প্রায় আট কিলোমিটার রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরু হবে। যার মোট খরচ ধরা হয়েছে ৪ কোটি ১ লক্ষ টাকা। গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন ফান্ডের (আরআইডিএফ) সাহায্যে জেলা পরিষদ কাজটি করবে। বর্ষার সময় ধরে কাজের সময়সীমা ঠিক হয়েছে এক বছর। কোথাও ১০ ফুট কোথাও ১৫ ফুট চওড়া ঝামা ইটের এবড়ো-খেবড়ো রাস্তাটি সারিয়ে ২৫ ফুট চওড়া করা হবে। রাস্তাটি নির্মাণ করতে কারও কারও বাড়ির জমি ছাড়তে হতে পারে বলেও জানিয়েছে পরিষদ। রাস্তার পাশের জমি থেকে মাটি নেওয়া হবে।
এলাকার মানুষের কাছে রহিমা আবেদন করে বলেন, “সম্প্রসারণের কাজে কারও বাড়ির গাছের ডাল যদি একটু কাটতে হয় বা কারও জমির মাটি নিতে হয়, আপনারা সহযোগিতা করবেন। রাস্তা তৈরি হয়ে গেলে আপনাদের জমির মূল্য তিন গুণ বেড়ে যাবে।” স্থানীয় সূত্রের খবর, বিধায়ক থাকাকালীন গোপালবাবু এই রাস্তার মাধ্যমে বনগাঁ-চাকদহ সড়ক এবং যশোহর রোডের মধ্যে একটি বাইপাস রাস্তা তৈরির উদ্যোগ করেছিলেন। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি ওই মর্মে দাবিও জানান। মাপজোকও হয়েছিল। কিন্তু সে পরিকল্পনা নানা কারণে বাস্তবায়িত হয়নি। বিধায়ক বিশ্বজিত্বাবুও রাস্তাটিকে বাইপাস করার আশ্বাস দিয়ে বলেন, “রাস্তাটি এলাকার মানুষের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাইপাস হিসেবে তৈরি হলে গোপালনগরের একটা বড় অংশের মানুষকে কলকাতায় যেতে হলে আর বনগাঁ শহরের যানজটের মধ্যে পড়তে হবে না। আবার বনগাঁ থেকে পাল্লা যাওয়ার পথের দূরত্বও কমে যাবে।”
এলাকার মানুষ আরও জানান, ঝামা ইটের রাস্তার ফলে ফসল হাটে বাজারে নিয়ে যেতে চাষিরা খুবই সমস্যায় পড়েন। স্কুল পড়ুয়ারা বর্ষায় যাতায়াত করতে নাজেহাল হয়। পোলতা, চালকি, সুন্দরপুর, শুল্ক, কালুপুর, সাতবেড়িয়া-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। স্থানীয় বাসিন্দা জয়দেব সরকার, শঙ্কর সরকার, শুকদেব বাগেরা বললেন, “রাতে রোগী নিয়ে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে যেতে খুবই অসুবিধায় পড়তে হয়। ফসল নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ি উল্টে যায়। রাস্তাটি তৈরি হলে আমাদের যাতায়াত সমস্যা মিটে যাবে।” রাস্তা নির্মাণের ক্ষেত্রে গ্রামবাসীরা সহযোগিতা করবেন বলে জানান।
এ দিনের অনুষ্ঠানে জেলা সভাধিপতি বলেন, “জেলায় পর পর নির্বাচনের কারণে ও চৌত্রিশ বছরে নতুন বাস্তুকার তৈরি না হওয়ার কারণে কাজের দিক থেকে আমরা কিছুটা পিছিয়ে রয়েছি। আপনারা ধৈর্য ধরুন আমরা উন্নয়ন করবই।”