পিষে গিয়েছে মোটর বাইক। —নিজস্ব চিত্র।
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ফুল, পেন, কেক, অ্যাডমিট কার্ড হাতে দিয়ে সবেমাত্র বিদায় জানানো হয়েছে। পরীক্ষার আগে কী ভাবে পড়তে হবে, তা নিয়ে অনেক কথা বোঝান শিক্ষকেরা। পরীক্ষার আগে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় না বেরনোরও পরামর্শ দিয়েছিলেন শিক্ষকেরা।
কিন্তু স্কুল থেকে বেরনোর পরে বাড়ি পৌঁছনোর আগেই দুর্ঘটনায় মারা গেল দুই ছাত্র। আশঙ্কাজনক অবস্থায় একজনকে কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাট থানার আমতলার কাছে টাকি রোডে। পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে স্থানীয় লক্ষণকাটি গ্রামের বাসিন্দা মসিউর রহমান গাজি (১৫) এবং বাবুসোনা গাজি (১৬)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের এক সঙ্গী মোস্তাক আহমেদ গাজি কলকাতায় চিকিৎসাধীন।
এই ঘটনার পরে ক্ষুব্ধ জনতা টাকি রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। তাদের অভিযোগ, একে অতিরিক্ত জোরে গাড়ি চালানো হয়। তার উপরে রাস্তার দু’পাশে লরি দাঁড় করিয়ে ইট, বালি, পাথরের ব্যবসা চলে। যে কারণে বার বার দুর্ঘটনা ঘটছে। সব জানা সত্ত্বেও পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা কার্যত দর্শকের। মৃত ও আহতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণেরও দাবি তুলেছেন স্থানীয় মানুষ। পুলিশ জনতাকে বুঝিয়ে শান্ত করে গাড়ি দু’টি আটক করেছে। চালক-খালাসিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
বড় জিরাফপুর তরুণ সঙ্ঘ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সজলকুমার দে বলেন, “স্কুলের প্রথা মতো এ দিন দুপুরে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বিদায় সম্বর্ধনা জানানো হয়। পরীক্ষার আগের ক’টা দিন কী ভাবে চলবে, শেষ মুহূর্তের পড়াশোনা কী ভাবে করবে, সে বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকারা সকলকে পরামর্শ দেন। এরপর তিন ছাত্র মোটর বাইকে দন্ডিরহাটের দিকে কোনও প্রয়োজনে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফেরার সময়ে দুর্ঘটনা ঘটে।” স্কুলের সকলেই অত্যন্ত মর্মাহত বলে জানান প্রধান শিক্ষক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরে তিন ছাত্র্র পকেটে মাধ্যমিক পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে মোটর বাইকে বেরিয়েছিল। দুপুর দেড়টা নাগাদ টাকি রাস্তা দিয়ে তারা ফিরছিল। সে সময়ে হাসনাবাদগামী একটি বাসের চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইকে ধাক্কা মারে। ছিটকে পড়ে তিন ছাত্র। সে সময়ে উল্টো দিক থেকে দ্রুতগামী একটি ইট-বোঝাই ট্রাকের চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাদের পিষে দিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই এক জনের মৃত্যু হয়। হাসপাতালের পথে মারা যায় আরও এক জন।