মেছোভেড়ির দখলকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ী এবং জমির মালিকদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল সন্দেশখালির আতাপুর গ্রামে। বৃহস্পতিবার রাতে গুলি-বোমা ছুড়ে, আলাঘরে আগুন ধরিয়ে, মারধরের ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েক জনকে স্থানীয় খুলনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আতাপুর গ্রামে প্রায় দু’শো বিঘা জমিতে গড়ে তোলা মেছোভেড়ির দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কিছু দিন থেকেই গণ্ডগোল চলছিল। আগেও কয়েক বার মারামারি, এমনকী গুলি-বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। গত চোদ্দো বছর ধরে ওই জমিতে ভেড়ি করে মাছ চাষ করছেন আনসার খা।ঁ এক দল জমির মালিকের দাবি, ২০১৪ সাল পর্যন্ত আনসারকে জমি লিজে দেওয়া হয়েছিল। লিজের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ওই ব্যবসায়ী জোর করে গুন্ডা দিয়ে ভয় দেখিয়ে মাছ চাষ করতে চাইছেন। আনসার খাঁর অবশ্য পাল্টা দাবি, এখনও কয়েক বছর লিজের মেয়াদ বাকি থাকায় ওই জমিতে তিনি মাছ চাষ করতে চান। অথচ এক দল লোক তাতে বাধা দিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার আলোচনা হওয়ার পরেও দু’পক্ষ লিজ নিয়ে দু’রকম নথি দেখানোয় কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে মাঝে মধ্যেই বিবাদে বাধে।
ওই ব্যবসায়ীকে জমি দিতে অনিচ্ছুকরা পরিবার নিয়ে সপ্তাহ খানেক ধরে মেছোভেড়িতে পাহারা দিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ উভয় পক্ষের মধ্যে জমির দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বাধে। এই ঘটনায় আহত দুলাল পাঠক, জুলু বিবি, শ্রীমতি সর্দার বলেন, “লিজের মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও ওই ব্যবসায়ী আমাদের না জানিয়ে জমিতে জল ঢুকিয়ে মাছ চাষের চেষ্টা করছেন। দলকে জানিয়ে কাজ না হওয়ায় পাহারার ব্যবস্থা করলে দুষ্কৃতীদের নিয়ে আমাদের উপরে হামলা চালানো হয়। মহিলাদের মারধর করা হয়েছে। আলাঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গুলি ছুড়ে হুমকি দিয়ে আমাদের এলাকা থেকে তাড়িয়ে দিতে চাইছে ওরা।”
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মাছ ব্যবসায়ীদের দাবি, “লিজের মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও বেশি টাকার লোভে কিছু মানুষের কথায় কয়েক জন জমির মালিক মিথ্যা অভিযোগ করছে। ওরা নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোল বাধিয়ে এখন আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করছে।”