বছর ঘুরতে চললেও এখনও সংস্কার হল না খাল, আতঙ্কিত ফলতাবাসী

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতা ব্লক জুড়ে যে নিকাশি খাল রয়েছে, তা দীর্ঘ দিন সংস্কার হয়নি। অধিকাংশ জায়গায় পলি জমেছে। কচুরি পানা হয়েছে দেদার। তার উপরে খাল দখল করে দোকান, বাড়ি-ঘরও তৈরি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ফলতা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৪ ০২:১৫
Share:

খালের উপরই তৈরি হয়েছে বাড়ি। ছবি: দিলীপ নস্কর।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতা ব্লক জুড়ে যে নিকাশি খাল রয়েছে, তা দীর্ঘ দিন সংস্কার হয়নি। অধিকাংশ জায়গায় পলি জমেছে। কচুরি পানা হয়েছে দেদার। তার উপরে খাল দখল করে দোকান, বাড়ি-ঘরও তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে নিকাশির ক্ষমতা কমেছে খালের। গত বর্ষায় জমা জলে প্লাবিত হয়েছিল বিস্তীর্ণ এলাকা। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল কয়েক হাজার বিঘা কৃষি জমি, ঘর-বাড়ি, মাছচাষের পুকুর। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে হয়েছিল বহু মানুষকে। সে সময়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতা থেকে প্রশাসনের কর্তারা সকলেই প্লাবিত এলাকায় গিয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন, গ্রীষ্মকাল পড়লেই খাল সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু ফের বর্ষা দোরগোড়ায় এলেও এখনও পর্যন্ত খাল সংস্কারের কাজ শুরুই করতে পারল না প্রশাসন।

Advertisement

ফলতা ব্লকের মূল নিকাশি খালটি ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের দোস্তপুর মোড় থেকে দিঘিরপাড় হয়ে কাঁটাখালি বড় খালে মিশেছে। কাঁটাখালি খালটি আবার মিশেছে হুগলি নদীতে। প্রায় ১৫ কিলোমিটার লম্বা ওই খাল শেষ কবে সংস্কার হয়েছে, তা সেচ দফতর বা এলাকার প্রবীন বাসিন্দারাও মনে করতে পারেন না। গত বর্ষায় প্লাবিত হয়েছিল দেবীপুর পঞ্চায়েতের আচান্দা, ঝুমনিয়া, হরিশপুর। বঙ্গনগর পঞ্চায়েতের গোবিন্দপুর, আমডালি, যাদববাটি। নপুকুরিয়া পঞ্চায়েতের নবাসন, সহলা, মাগনা, আশিনা-সহ প্রায় ১৫-২০টি গ্রাম। সে বার দিন দ’শেক লেগেছিল জমা জল সরতে।

এ বারও একই আশঙ্কায় ভুগছেন স্থানীয় মানুষ। তাঁদের একাংশের অভিযোগ, খাল সংস্কার করতে গেলে প্রথমেই খাল দখল করে যে সব দোতলা-তিনতলা বাড়ি-দোকান গজিয়ে উঠেছে সেগুলি ভাঙা দরকার। অভিযোগ, খালের দখল নিয়ে যারা এমন কাণ্ড ঘটাচ্ছে, তারা কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত। রামচন্দ্র মিথিয়া, গোলক হালদারদের বক্তব্য, গত বর্ষায় বিস্তীর্ণ এলাকা ভেসে যাওয়ার পরে প্রশাসন ও শাসক দলের নেতারা এসে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বর্ষা কাটলেই নিকাশি খাল এবং স্লুইস গেটগুলি সংস্কার হবে। এমনকী, ক্ষতিগ্রস্থ চাষিদের ক্ষতিপূরণেরও ব্যবস্থা হবে। কিন্তু বছর ঘুরতে চললেও তেমন কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি।

Advertisement

ফলতার বিধায়ক তমোনাশ ঘোষ বলেন, “এই এলাকার খালের সংস্কারের বিষয়টি বিধানসভায় তুলেছিলাম। সেখানে ঠিক হয়েছে, সুন্দরবন উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা, জেলা সভাধিপতি শামিমা শেখ-সহ এলাকার নেতৃত্বকে নিয়ে সভা ডেকে বর্ষার আগেই খাল ও স্লুইস গেট সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে।” কিন্তু এত দেরিতে নড়েচড়ে বসল কেন সরকার, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে স্থানীয় মানুষের মধ্যে। ডায়মন্ড হারবারের সেচ দফতরের সহকারী বাস্তুকার প্রদীপ হালদার বলেন, “আগের বছর বর্ষায় এলাকা প্লাবিত হওয়ার পরে ওই এলাকার সমস্ত স্লুইস গেটগুলি সংস্কার করে জল বের করার ব্যবস্থা হয়েছিল। খাল সংস্কারের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলাও হয়েছিল।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement