দুর্গা পুজো নয়, জগদ্ধাত্রীই মূল উত্‌সব ফলতায়

আর পাঁচটা গ্রামের বাসিন্দারা তখন দেবী দুর্গার আরাধনায় ব্যস্ত। অথচ সেই সময় থেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ফলতার হাসিমনগর গ্রামের বাসিন্দারা জগদ্ধাত্রীর আরাধনার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন। কারণ তাঁদের কাছে বড় উত্‌সব মানেই জগদ্ধাত্রীপুজো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ফলতা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৪ ০০:৫৫
Share:

জগদ্দলের গোলঘরে ফ্রেন্ডস ক্লাবে গুজরাতি রমণীর বেশে প্রতিমা।

আর পাঁচটা গ্রামের বাসিন্দারা তখন দেবী দুর্গার আরাধনায় ব্যস্ত। অথচ সেই সময় থেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ফলতার হাসিমনগর গ্রামের বাসিন্দারা জগদ্ধাত্রীর আরাধনার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন। কারণ তাঁদের কাছে বড় উত্‌সব মানেই জগদ্ধাত্রীপুজো।

Advertisement

ডায়মন্ডহারবারের ধর্মতলা রোডের মোল্লারঠেস মোড়ে নেমে কিছুটা এগিয়ে বাঁ দিকের হাঁটা রাস্তায় হাসিমনগর গ্রাম। ঢোকার মুখেই ডান দিকে বানেশ্বরপুর যুব সমাজের মন্দিরের আদলে বিশাল মণ্ডপ। বাঁ দিকে নিউ সঙ্ঘের দোতলা বাড়ির আদলের মণ্ডপে রয়েছে মানানসই প্রতিমা। এর পর পড়বে সবুজ সঙ্ঘের কাল্পনিক মন্দিরের আদলের মণ্ডপ ও নিউ ইয়ং স্টাফের পুজো মণ্ডপটি। আর এই ভাবে সারা গ্রাম জুড়ে প্রায় ২৭টি জগদ্ধাত্রীপুজোর মণ্ডপ ও প্রতিমা রয়েছে।

সারা রাত ধরে পুজো পরিক্রমা করতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য মোড়ে ঢোকার মুখ থেকে গোটা গ্রাম আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে। গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা কৃষিজীবী ও ব্যবসায়ী হলেও দুর্গাপুজো করার সামর্থ্য তাঁদের রয়েছে। কিন্তু বংশ পরম্পরায় এই ভাবেই তাঁরা বছরের পর বছর এই পুজো করে আসছেন। তাঁরা বলেন, “এখানে জগদ্ধাত্রীপুজো প্রথম শুরু হয় বছর চল্লিশ আগে। সেই সময়েই ঠিক হয়েছিল দুর্গা বা কালীপুজো যেহেতু প্রায় সব গ্রামেই করা হয়, তাই আমরা জগদ্ধাত্রীপুজো করব। তা ছাড়া বাপ-ঠাকুরদারা যে পুজোর রীতি চালু করে গিয়েছেন তা আমরা হঠাত্‌ করে বন্ধও করতে পারি না।”

Advertisement

অবশ্য তাঁরা এও জানান, শুরুতে এতগুলি পুজো হতো না। গত দশ-পনেরো বছরের মধ্যে পুজোর সংখ্যা ২৭-এ দাঁড়িয়েছে। কার্তিক সামন্ত, তিলোত্তমা সামন্ত, বিফল পড়িয়ারা বললেন, “পাশের গ্রামের বাসিন্দারা যখন নতুন জামা কাপড় পরে দেবী দুর্গার দর্শনে বেরোন, আমরা তখন জগদ্ধাত্রীদেবীর আগমনের অপেক্ষায় থাকি। নতুন জামা-কাপড় পরা থেকে বাড়িতে দূরে থাকা আত্মীয়-স্বজনের আনাগোনাসবই আমাদের এই পুজো ঘিরে। অধিকাংশ পুজো মণ্ডপেই চলবে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।”

পুজোর ক’দিন সারা রাত ধরে তাই উস্তি, ফলতা, ডায়মন্ডহারবার ছাড়াও কলকাতার বেহালা, ঠাকুরপুকুর থানা এলাকা থেকেও কাতারে কাতারে দর্শকের ঢল নামে হাসিমনগরে।

ছবিগুলি তুলেছেন দিলীপ নস্কর, সজল চট্টোপাধ্যায়, শান্তনু হালদার, নির্মাল্য প্রামাণিক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement