আপ শিয়ালদহ-ক্যানিং লোকাল ধরার জন্য প্ল্যাটফর্ম ধরে পড়িমড়ি করে দৌড়োচ্ছেন এক ভদ্রমহিলা। কিন্তু ভিড়ের মধ্যে টাল সামলাতে পারলেন না। মুখ থুবড়ে পড়লেন এগরোল-চাউমিন তৈরির গরম কড়াইয়ের উপর। তাই দেখে ঝাঁঝিয়ে উঠলেন দোকানি। ভদ্রমহিলা কাঁচুমাচু মুখে জানালেন, তাঁর কী দোষ। তিনি তো গা বাঁচিয়ে চলতে চেয়েছিলেন। তা তো হলই না। উল্টে গরম কড়াইয়ের ছ্যাঁকা খেতে হল তাঁকে।
এমন অভিজ্ঞতা শুধু ওই মহিলার একার নয়, ক্যানিংয়ের ঘুটিয়ারিশরিফ স্টেশন দিয়ে যাতায়াতকারী প্রায় প্রতি যাত্রীরই। তাঁদের ক্ষোভ, দিন পর দিন বলা নেই কওয়া নেই প্ল্যার্টফর্মের উপর গজিয়ে উঠছে হরেক কিসিমের দোকান। কী নেই সেই তালিকায়। সব্জি, ফল, মাছ, কাপড়, কাঠের আসবাসপত্র, পুরানো ইলেকট্রনিক্স, মায় মেসিন-পার্টসের দোকান পর্যন্ত! যাত্রীদের বক্রোক্তি, দূর থেকে দেখলে, স্টেশনটি ছোটখাটো বাজার বলে ভ্রম হয়। স্থানীয় মানুষদের অভিযোগ, শুধু দোকানপাট নয় সন্ধে নামলেই স্টেশন জুড়ে বসে মাদক বিক্রি-সেবনের আসর। বাড়ছে দুষ্কৃতীদের আনাগোনাও। ফলে স্টেশন লাগোয়া এলাকায় প্রায়শই চুরি-চামারির ঘটনা ঘটছে। বাদ নেই প্রকাশ্য দিবালোকে যাত্রীদের জিনিসপত্রও। যাত্রীদের অভিযোগ, বার বার প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। স্টেশনে যাত্রীদের নিরাপত্তা বলতে কিছুই নেই। ক্যানিং-২ ব্লকের শাসকদলের সভাপতি সওকত মোল্লাও সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা রাজনৈতিক ভাবে কখনও এই ধরনের কার্যকলাপ সমর্থন করি না। তাই এই সমস্যার সমাধানে কড়া পদক্ষেপ করার জন্য আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং রেল পুলিশও জানিয়েছে, সাদা পোশাকে অভিযান চালিয়ে স্টেশন চত্বরে মাদক বিক্রির পরিমাণ অনেকটাই কমানো গিয়েছে। তবে লুকিয়ে চুরিয়ে কেউ তা করলে খবর পেলে তাদের ধরা হবে।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।”