চাষের জমিতে মেছোভেড়ি তৈরির প্রতিবাদে দু’পক্ষের মারামারিতে জখম হলেন পাঁচ জন। রবিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাটের পিঁফা পঞ্চায়েতের দেভোগ গ্রামে। ঘটনায় গুরুতর আহত সাহেব আলি গাইন নামে এক চাষিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে বসিরহাট থানার আইসি গৌতম মিত্র বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। পরে দু’পক্ষই থানায় পরস্পরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেন। গৌতমবাবু বলেন, “কেউ যদি স্বেচ্ছায় জমি দিতে রাজি না হন, তা হলে জোর করে মাছ চাষ করতে দেওয়া হবে না। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উন্নত মানের ফসল চাষে ওই পঞ্চায়েতের খিদিরপুর, হিজলা, কঠুর, আটকড়িয়া, শ্বেতপুর, দেভোগ-সহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের বেশ নাম ডাক আছে। এ দিকে দেভোগে প্রায় ছ’শো বিঘার নোনাতলা বিলের একটা অংশ নিয়ে বছর দুই আগে কয়েক জন ব্যবসায়ী মাছ চাষ শুরু করেন। সেই নিয়ে স্থানীয় কৃষকদের একাংশের সঙ্গে গত বছর তাঁদের গণ্ডগোলও বাধে। বিষয়টিতে শেষ পর্যন্ত পুলিশি হস্তক্ষেপেরও প্রয়োজন পড়ে। পুলিশ জানায়, এ দিন জেসিপি দিয়ে মাছ চাষের খাল চওড়া করা হচ্ছিল। সে সময়ে চাষিরা একত্রিত হয়ে তার প্রতিবাদ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, “নিয়ম মেনে ইচ্ছুক চাষিদের কাছ থেকে জমি নিয়েই মাছ চাষ করা হচ্ছে। অথচ খাল কাটার সময়ে গ্রামবাসীদের একাংশ বাধা দেন। তাঁদের মারে আমাদের কয়েক জন আহত হন।” অন্য দিকে গ্রামবাসীদের অভিযোগ, “মিষ্টি জলের মাছ চাষের নাম করে মেছোভেড়ি করার পর সেখানে নোনা জল ঢুকিয়ে চাষ শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। এ দিন তারই প্রতিবাদ করা হয়।”
কৃষকদের পক্ষে আব্দুল কাদের সর্দার, মুকুল মণ্ডল বলেন, “নোনা জল ঢুকে ফসলের জমি নষ্ট হওয়ায় কৃষকদের বড় রকম ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা চাইছেন ভয় দেখিয়ে কাজ হাসিল করতে। পুলিশ ও প্রশাসনের সর্বস্তরে জানানো সত্ত্বেও সকলে নির্বিকার। প্রতিবাদ করতে গেলে ব্যবসায়ীদের ভাড়াটে গুণ্ডারা আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।”