নীলিমেশ দাস।
পুরসভার প্রধান নির্বাচিত হলেন তৃণমূলের নীলিমেশ দাস। বৃহস্পতিবার হাবরা পুরসভায় তাঁকে শপথ বাক্য পাঠ করান বারাসতের মহকুমাশাসক পীযূষকান্তি দাস। প্রসঙ্গত ১ জানুয়ারি কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পুরসভার চেয়ারম্যান সুবীন ঘোষের মৃত্যু হয়। তাঁর বোন ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাখি দাস এ দিনই উপ পুরপ্রধান হিসেবে শপথ বাক্য পাঠ করেন।
সুবীনবাবুর মৃত্যুর পর চেয়ারম্যান কে হবেন, তা নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে কৌতুহল ছিলই। বেশ কয়েক জন কাউন্সিলর চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে হাজিরও ছিলেন। অবশেষে সুবীনবাবু পদে থাকাকালীন উপপুরপ্রধান বছর চল্লিশের নীলিমেশবাবুই প্রধানের পদ নিলেন। পদের দাবিদার হিসেবে সর্বকনিষ্ঠ হওয়ায় দলের কিছু কাউন্সিলরের মধ্যে তাঁকে নিয়ে চাপা ক্ষোভও তৈরি হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, “দলে এখন নতুনদেরই গুরুত্ব। নীলিমেশবাবু ২০১৩ সালের পুর নির্বাচনের আগে কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। অথচ এত দিন ধরে দলের সঙ্গে যুক্ত কাউন্সিলরদের বাদ দিয়ে তিনিই প্রধান হলেন।”
তৃণমূল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, নীলিমেশবাবু ছিলেন হাবরা শহর কংগ্রেসের সভাপতি। ২০১৩ সালের মার্চ মাসে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। তিনি হাবরা শ্রীচৈতন্য কলেজে ছাত্র পরিষদের হয়ে জয়ী হয়ে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে স্থানীয় কংগ্রেস নেতা বিমান দত্তের হাত ধরে কংগ্রেসে যোগ দেন। ২০১৩ সালের পুর নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়িয়ে তিনি ১৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হয়েছিলেন। পুরসভার মোট ২৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ১৫টি, সিপিএম পায় ৮টি ও কংগ্রেস একটি। পরে ওই কংগ্রেস কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। ওই বছরের ২২ অক্টোবর সুবীনবাবু প্রধান পদে নিযুক্ত হন।
কেন তিনিই প্রধান হলেন?
জেলা তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, স্বচ্ছ ভাবমূর্তি, পরিশ্রমী ও দক্ষ সংগঠক হওয়ার কারণেই ফল তাঁর পক্ষে গিয়েছে। যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা হাবরার বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “সম্প্রতি মধ্যমগ্রামে জেলা তৃণমূল দফতরে দলের কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানে কাউন্সিলরেরা গোপন ব্যালটে ভোট দিয়ে প্রধান ও উপপ্রধান প্রার্থীদের মনোনীত করেন। ওই ব্যালট রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর কাছে খোলা হয়।” তিনি জানান, সেখানেই দেখা গিয়েছে, প্রধান হিসেবে সর্বাধিক ৯ জন কাউন্সিলর নীলিমেশবাবুকে বেছেছেন এবং রাখিদেবীকে সর্বাধিক ৮ জন কাউন্সিলর উপপ্রধান হিসেবে নির্বাচন করেছেন।
এ দিন রাজ্য তৃণমূলের পক্ষ থেকে বন্ধ খামে প্রধান ও উপপ্রধানের নাম লিখে পাঠানো হয়েছিল। পুরসভায় তা খোলা হয়। প্রধান হয়ে নীলিমেশবাবুর প্রতিক্রিয়া, “হাবরা শহরকে যানজট মুক্ত করতে দ্বিতীয় হকার্স মার্কেট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। নিকাশি ও পানীয় জলের যে প্রকল্পগুলি কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে, তা ছাড়িয়ে আনতে তৎপর হব। সার্বিকভাবে পুর পরিষেবার মান উন্নত করতেও উদ্যোগী হতে হবে।” এ দিন বিরোধীরাও তাঁকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।