অবৈধ কারখানায় বিস্ফোরণে মৃত ২, দেহ আটকে বিক্ষোভ

গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে ধসে পড়ল অবৈধ কারখানার একাংশ। প্রাণ গেল দুই শ্রমিকের। আহত হলেন আরও জনা দশেক। শনিবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর থানা এলাকায় ওই ঘটনার পরে দুই শ্রমিকের মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, শাসক দলের এক নেতার মদতে ওই ঘনবসতি এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মতো অবৈধ কারখানা গজিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দত্তপুকুর শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৪ ০১:১৪
Share:

কারখানায় পড়ে শ্রমিকের দেহ। সুদীপ ঘোষের তোলা ছবি।

গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে ধসে পড়ল অবৈধ কারখানার একাংশ। প্রাণ গেল দুই শ্রমিকের। আহত হলেন আরও জনা দশেক। শনিবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর থানা এলাকায় ওই ঘটনার পরে দুই শ্রমিকের মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, শাসক দলের এক নেতার মদতে ওই ঘনবসতি এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মতো অবৈধ কারখানা গজিয়েছে। যেখানে দুর্ঘটনা ঘটলে, তার প্রভাব এলাকার বাসিন্দাদের উপরে পড়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। অবিলম্বে আইনভঙ্গকারী ওই সব কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে পুলিশকে।

Advertisement

পুলিশকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ বচসা চলে এলাকাবাসীর। অনেক বুঝিয়ে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের মধ্যে মফিজুল ইসলাম (৩৫) ওই এলাকারই বাসিন্দা। কিন্তু অন্য ব্যক্তির পরিচয় রাত পর্যন্ত জানা যায়নি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ভিন্ রাজ্য থেকে এসেছিলেন তিনি। পুলিশ সূত্রের খবর, কারখানাটির মালিক বনগাঁর বাসিন্দা। তাঁর খোঁজ শুরু হয়েছে। কী কারণে কারখানার গ্যাস সিলিন্ডারটি ফেটে গেল, তা দেখা হচ্ছে। আহতদের মধ্যে সাত জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় বারাসত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

স্থানীয় সূত্রের খবর, ইছাপুর-নীলগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের তালদাড়িয়া এলাকায় দিন সাতেক আগে ওই গেঞ্জির কারখানাটি কাজ শুরু করে। এ দিন সকালে কারখানায় একটি বয়লারের সঙ্গে যুক্ত গ্যাস সিলিন্ডার আচমকা ফেটে যায়। বিস্ফোরণের পরেই ইটের গাঁথনি-সহ কারখানার ছাদের একাংশ ভেঙে পড়ে। মৃত্যু হয় ওই দুই শ্রমিকের। কারখানায় আগুন ছড়াতে দেখে বাকি শ্রমিকেরা সামনের একটি পুকুরে ঝাঁপ দেন। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ জানিয়েছে, কারখানাটিতে আগুন নেভানোর কোনও ব্যবস্থা ছিল না। বৈধতার অন্য কাগজপত্রও নেই।

Advertisement

এ দিন বিক্ষোভে সামিল হওয়া বাসিন্দাদের দাবি, এলাকায় সরকারি অনুমোদন ছাড়াই অনেক গেঞ্জি এবং লেদ কারখানা গড়ে উঠেছে। সাধারণত এ ধরনের কারখানা তৈরি করতে গেলে স্থানীয় পঞ্চায়েত বা পুরসভার দেওয়া ট্রেড লাইসেন্স, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা, দমকল, পুলিশ এবং সর্বোপরি জেলা প্রশাসনের ছাড়পত্র লাগে।

কিন্তু এলাকায় এক তৃণমূল নেতার প্রশ্রয়ে সে সবের পরোয়া না করেই কারখানা গড়া হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের বক্তব্য, “এই কারখানাগুলোতে বড় দুর্ঘটনা ঘটলে মাসুল দিতে হবে আমাদের।”

স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য তথা এলাকার তৃণমূল নেতা আবুল কাসেম এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি। তবে এলাকার তৃণমূল বিধায়ক রথীন ঘোষ বলেন, “ঘটনাটা মর্মান্তিক। এখানকার অবৈধ কারখানাগুলির বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আমাদের দলের কারও মদতে এই কারখানাগুলোর বাড়বাড়ন্ত হয়েছে বলে জানা নেই। খোঁজ নিচ্ছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement