আহত: শ্যামনগরে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
চুরিতে বাধা দিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হলেন এক তরুণ।
রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে শ্যামনগর নেহরু মার্কেট এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, অরিন্দ্রজিৎ সরকার নামে ওই তরুণের হাত ফুঁড়ে গুলি বেরিয়ে যায়। এই ঘটনায় পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। অরিন্দ্রজিতের দাবি, পাড়ার অন্যদের সঙ্গে তিনি চুরিতে বাধা দিয়েছিলেন বলেই গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা।
এলাকায় দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য নিয়ে সরব হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। গুলি চালানোর ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর কুড়ির অরিন্দ্রজিতের বাড়ি নেহরু মার্কেট এলাকায়। তিনি একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করে কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু মাঝপথে পড়া ছেড়ে দেন। বছর দু’য়েক আগে তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। আগেই মারা গিয়েছিলেন মা। বর্তমানে কাকার বাড়িতে থাকেন ওই যুবক।
অরিন্দ্রজিৎ জানান, রবিবার রাতে খাওয়ার পরে বাড়িতে বসে অন্যদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ নেহরু মার্কেট সংলগ্ন একটি ক্লাবের সামনে থেকে গোলমালের আওয়াজ শোনেন। জটলা দেখে বেরিয়ে ক্লাবের সামনে যান। অরিন্দ্রজিতের দাবি, ক্লাবের সামনে পাড়ার বেশ কয়েকজন যুবক দাঁড়িয়েছিল। তাদের সামনে একটি ভ্যানে বেশ কিছু পুরনো লোহালক্কর ও কারখানার যন্ত্রাংশ ছিল। পাড়ার ছেলেদের কাছ থেকে অরিন্দ্রজিৎ জানতে পারেন, কয়েকজন দুষ্কৃতী ভ্যানে করে একটি বন্ধ কারখানার যন্ত্রাংশ চুরি করে পালাচ্ছিল। ক্লাবের সদস্যেরা তাদের আটকান। পরে পাড়ার লোকেরাও জড়ো হন। ঠিক হয়, দুষ্কৃতীদের আটকে পুলিশে খবর দেওয়া হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোলমালের মাঝে কয়েকজন দুষ্কৃতী পালানোর চেষ্টা করে। কয়েকজন তাদের আটকানোর চেষ্টা করলে এক দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র বের করে গুলি চালিয়ে দেয়। তিন রাউন্ড গুলি চলে। একটি গুলি শূন্যে ছোড়া হলেও বাকি দু’টি ভিড় লক্ষ্য করেই ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। শেষ গুলিটি লাগে অরিন্দ্রজিতের বাঁ হাতে কাঁধের নীচে। রক্তাক্ত যুবককে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন বাকিরা। সেই সুযোগে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ আসে। পরে এলাকা থেকেই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। অরিন্দ্রজিতকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার সকালে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, গত সেপ্টেম্বরে একটি মন্দিরে চুরির ঘটনায় অরিন্দ্রজিতকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। সে কথা অস্বীকার করছেন না যুবক। তিনি জানান, অসৎসঙ্গে পড়ে তিনিও বিপথগামী হয়েছিলেন। মন্দিরে চুরির ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন। তাঁর কথায়, ‘‘সেই আফসোস আমার আজও রয়েছে। তারপর থেকে আমি ভাল হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ছোটখাট কাজ করছি।”