প্রতীকী চিত্র।
বাংলাদেশ থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট এ দেশে পাচারের সময়ে বিএসএফের হাতে ধরা পড়ল এক যুবক।
বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটার ডোবরাপাড়া সীমান্তে। বিএসএফ জানিয়েছে, পাকড়াও হওয়া যুবকের নাম সমীর মণ্ডল। বাড়ি গাইঘাটার বর্ণবেড়িয়া এলাকায়। সাড়ে ৬ হাজার ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে তার কাছ থেকে। আন্তর্জাতিক বাজারে যার মূল্য প্রায় সাড়ে ১৯ লক্ষ টাকা। সমীরকে বিএসএফ নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরোর হাতে তুলে দিয়েছে। ট্যাবলেটগুলিও দেওয়া হয়েছে তাদের। দীর্ঘ দিন ধরে খবর আসছিল, বাংলাদেশ থেকে এ দেশে চোরাপথে ইয়াবা ট্যাবলেট ঢুকছে। তবে এই প্রথম বিএসএফ এত বড় সাফল্য পেল। বিএসএফের ৬৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের কাছে খবর আসে, ইয়াবা ট্যাবলেট ঢুকছে। সেই মতো জওয়ানেরা নজরদারি চালান বর্ডার রোডে। তাতেই সাফল্য মিলেছে।
হেরোইন, তরল মাদকের পরে এ বার ইয়াবার নেশাও বাড়ছে সীমান্ত এলাকার তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, বাগদা, গাইঘাটা এলাকায় ইয়াবার নেশা করেন কিছু যুবক। কারবারিরা গোপনে ট্যাবলেট পৌঁছে দিচ্ছে তাঁদের কাছে।
সম্প্রতি বনগাঁর জয়পুল ফুলতলা এলাকা থেকে এক ব্যক্তিকে আগ্নেয়াস্ত্র পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পুলিশের দাবি, ধৃতকে জেরায় জানা যায়, ওই ব্যক্তি বাংলাদেশ থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট চোরাপথে এ দেশে আনত। সম্প্রতি পেট্রাপোল থানার পুলিশও ইয়াবা ট্যাবলেটের খোঁজে ওই ব্যক্তির বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিল। কিন্তু কোনও ভাবে সে ট্যাবলেট সরিয়ে ফেলতে পেরেছিল।
পুলিশ ও বিএসএফের বক্তব্য, নির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া ইয়াবা ধরা মুশকিল। কারণ, প্যান্টের পকেট, ছোট ব্যাগে করে বা অন্য উপায়ে সহজেই ইয়াবা নিয়ে আসা সম্ভব। ধরা পড়ার আশঙ্কা তুলনায় কম। সীমান্তের বাসিন্দা জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে আসা ইয়াবা সাইজ অনুযায়ী দামে বিক্রি হচ্ছে এ দেশে। খুব ছোট সাইজের ইয়াবা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। একটু বড় সাইজের ইয়াবার দাম ৩০০ টাকা। বাংলাদেশেও নেশার ট্যাবলেট হিসাবে ইয়াবা জনপ্রিয়। বাংলাদেশে, ‘বাবা’ নামেই পরিচিতি লাল রঙের এই ট্যাবলেটের। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, মূলত মায়ানমারে তৈরি হয় ইয়াবা। সেখান থেকে বাংলাদেশ হয়ে ভারতে ঢোকে। মূলত মেথা অ্যাম্ফিটামিন ও ক্যাফেইন মিশ্রিত এই ট্যাবলেট সাময়িক ভাবে যৌন উত্তেজনা বাড়ায়। শরীর-মন তরতাজা হয়। কিন্তু নিয়মিত খেলে যৌন উত্তেজনা হ্রাস পায়। এই নেশা করে টানা ৭-১০ দিন রাত জেগে থাকা যায়।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ইয়াবা নিলে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, ঘুম কমে যাওয়া, ফুসফুসের ক্ষতি হতে পারে। এই নেশার ফলে হতাশা গ্রাস করে। আত্মহত্যার প্রবণতাও বেড়ে যায়।