প্রতীকী ছবি।
স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন তাঁরা। তার পরে এক মাসও কাটেনি। সেই বাড়ি থেকেই মিলেছিল মহিলার দেহ। ছ’বছর আগের সেই খুনের ঘটনায় মহিলার সঙ্গী যুবককে শুক্রবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল ব্যারাকপুর আদালত। সাজাপ্রাপ্ত যুবকের নাম মৃদুল খান। এ দিন ব্যারাকপুরের তিন নম্বর ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক মদনমোহন মিশ্র ওই নির্দেশ দিয়েছেন। মৃদুলকে দু’হাজার টাকা জরিমানাও করেছেন বিচারক। সেই টাকা অনাদায়ে তাকে আরও দু’মাস জেল খাটতে হবে। এই মামলার সরকারি আইনজীবী সত্যব্রত দাস জানান, নিহত মহিলার নাম উমা সাহা। বছর চৌত্রিশের উমার বাড়ি ছিল উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার গোলাবাটি গ্রামে। বিবাহবিচ্ছিন্না উমা দমদমের একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। দমদমেরই ইউ কে দত্ত রোডে বাড়ি মৃদুলের। বিবাহিত মৃদুল ব্যবসা করত। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাজের সূত্রেই দমদমে দু’জনের আলাপ হয়। পরিচয় ক্রমে গাঢ় হয়। উমার কাছে নিজেকে অবিবাহিত বলে পরিচয় দিয়েছিল মৃদুল। সে উমাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেয়। উমাকে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়ে দমদমের মেঘনাদ সাহা রোডের একটি বাড়ির একতলা ভাড়া নেয় মৃদুল। সে উমাকে আশ্বাস দিয়ে বলেছিল, ভাড়াবাড়িতে ঢুকেই বিয়ে করবে। তার পরে নিজের বাড়িতে জানাবে।সরকারি আইনজীবী জানান, ভাড়াবাড়িতে আসার দিন কয়েকের মধ্যেই উমা জেনে যান যে, মৃদুল বিবাহিত। তার পরেই শুরু হয় অশান্তি। উমাকে নিয়মিত মারধর শুরু করে মৃদুল। এ নিয়ে বাড়িওয়ালাও আপত্তি জানান। তিনি সাফ বলে দেন, তাঁর বাড়িতে থেকে এ সব করা যাবে না। মৃদুলকে বাড়ি ছেড়ে দিতে বলেন তিনি। মৃদুল সাত দিন সময় চায়। দিন তিনেক পরে, ২০১৩ সালের ৭ এপ্রিল খুব ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় মৃদুল। সেই সময়ে বাড়িওয়ালার সামনে পড়ে যায় সে। মৃদুল জানায়, দমদম স্টেশনে এক আত্মীয়কে আনতে যাচ্ছে সে। তার পরে আর ফেরেনি মৃদুল। দিনভর বাড়ি বন্ধ দেখে রাতে দমদম থানায় খবর দেন বরুণবাবু। পুলিশ এসে বন্ধ ঘর থেকে উমার দেহ উদ্ধার করে। পরদিন উমার বাবা প্রভাত নাগ খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। কান্টা নামে স্থানীয় এক যুবক মৃদুলকে বাড়ি ভাড়া পেতে সাহায্য করেছিলেন। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। তাঁর ফোনে মৃদুলের ফোন এসেছিল। সেই কলের সূত্র ধরে ঘটনার বেশ কিছু দিন পরে পুলিশ মৃদুলকে গ্রেফতার করে। আদালত কান্টাকে মুক্তি দিয়েছে।