—ফাইল চিত্র।
অস্থায়ী সাফাই কর্মীদের আন্দোলনের জেরে দীর্ঘ দিন ধরেই অশান্ত ভাটপাড়া পুরসভা। মঙ্গলবার ফের তাঁরা কর্মবিরতি শুরু করেছেন। যার জেরে পুর এলাকায় এ দিন সাফাইয়ের কাজ ব্যাহত হয়েছে। রাস্তার পাশে ডাঁই হযে পড়ে থাকতে দেখা যায় জঞ্জাল।
তৃণমূলের হাত থেকে বিজেপির হাতে যাওয়ার পরে শুরু হয়েছিল পুরসভার অস্থায়ী সাফাই কর্মীদের হরতাল। বিজেপির হাত থেকে বোর্ড ফের তৃণমূলের হাতে এসেছে। কিন্তু অস্থায়ী সাফাই কর্মীদের ক্ষোভ বিশেষ কমেনি।
এ দিন পুরসভা থেকে কোনও ট্রাক্টরও বেরোতে দেননি অস্থায়ী সাফাই কর্মীদের একাংশ। ফলে অধিকাংশ এলাকায় জঞ্জাল তোলা হয়নি। দুপুরে অস্থায়ী সাফাই কর্মীদের সঙ্গে পুর কর্তৃপক্ষের বৈঠক সন্তোষজনক হলেও ধর্মঘট তোলার বিষয়ে কোনও ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। পুর কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন, অচিরেই সমস্যা মিটবে।
এক সময়ে ভাটপাড়ার পুরপ্রধান ছিলেন এলাকার তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহ। গত লোকসভা ভোটের আগে অর্জুন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গেলে অনাস্থা এনে পুরপ্রধানের পদ থেকে তাঁকে অপসারিত করা হয়। লোকসভা ভোটে জিতে পুরপ্রধান নির্বাচিত হন অর্জুনের ভাইপো সৌরভ সিংহ। কিছু দিন পরেই শুরু হয় অস্থায়ী সাফাই কর্মীদের হরতাল। তাঁদের অভিযোগ, বেতন বকেয়া পড়ছে। সে সময়ে প্রায় পাঁচ মাসের বেতন বকেয়া ছিল। বিজেপির অভিযোগ ছিল, পুর দফতর প্রাপ্য টাকা দিচ্ছে না।
পরে অনাস্থায় অপসারিত হন সৌরভ। তৃণমূলের হাতে বোর্ড আসার পরে বকেয়া বেতনের কিছুটা মেটানো হয়েছিল বলে জানিয়েছেন অস্থায়ী সাফাই কর্মীরা। বেতনও নিয়মিত হচ্ছিল। কিন্তু বিজেপির বোর্ডের বকেয়া এখনও মেটানো হয়নি বলে অভিযোগ। আবার নতুন করে তিন মাসের বেতন বকেয়া পড়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অর্জুন।
গত কয়েক দিন ধরেই বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন অস্থায়ী সাফাই কর্মীরা। মঙ্গলবার তাঁরা কাজে যোগ দেননি। এ দিন ভোরে তাঁরা পুরসভার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। পুরসভার আধিকারিকেরা এসে বোঝালেও গেট থেকে সরেননি তাঁরা।
দুপুরে বৈঠকের পরে পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এক মাসের বকেয়া বেতন সোমবারেই দিয়েছি। বাকিটাও দিয়ে দেব। একটা ওভারটাইমের টাকা ওঁরা দাবি করেছেন। আমাদের মনে হয়েছে, সেই বিল খতিয়ে দেখা দরকার।’’ তাঁর অভিযোগ, বিজেপির বোর্ড থাকাকালীন অনৈতিক ভাবে এক হাজারজনকে নিয়োগ করা হয়েছিল। তার দায় এই বোর্ডের ঘাড়ে এসে পড়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্র প্রাপ্য টাকা দিচ্ছে না। ওঁদের কর্মবিরতি তুলতে অনুরোধ করেছি।” সাফাই কর্মীরা জানিয়েছেন, কিছু দাবি এখনও মেটেনি। বৈঠক করে কর্মবিরতি প্রত্যাহার নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।