স্বাবলম্বী: ঘর সাজানোর জিনিস তৈরি করছেন মহিলারা। নিজস্ব চিত্র
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের উদ্যোগে হাতের কাজ শিখে স্বনির্ভর হচ্ছেন গ্রামের মহিলারা। নদী তীরবর্তী কুমিরমারি, সাতজেলিয়া, লাহিড়ীপুর, পাখিরালয়-সহ আশেপাশের বেশ কিছু এলাকায় জঙ্গল নির্ভরতা কমাতে স্থানীয় মহিলাদের হাতের কাজের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প। তিন মাসের প্রশিক্ষণ শেষে নিজেরাই নানা জিনিস তৈরি করছেন সুপর্ণা, যমুনা, মধুশ্রীরা। সম্প্রতি সেই সব সামগ্রী বিক্রির জন্য সজনেখালিতে শুরু হয়েছে প্রদর্শনী।
এই সব এলাকায় প্রধান জীবিকা মাছ, কাঁকড়া ধরা। গত কয়েক বছরে মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন অনেকে। বাঘের হানায় মৃত্যু হয়েছে বহু মৎস্যজীবীর। জঙ্গল নির্ভরতা কমাতে বন দফতর ও সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের তরফে বিভিন্ন সময়ে নানা উদ্যোগ করা হয়েছে। পুকুরে মাছ চাষ, মৌমাছি পালন শেখানো হয়েছে গ্রামবাসীদের। মাস কয়েক আগে এলাকার মহিলাদের হাতের কাজ শেখানোর উদ্যোগ শুরু হয়। তিন মাস ধরে নানা ধরনের হাতের কাজ শেখানো হয়েছে যৌথ বন পরিচালন কমিটির মহিলাদের। ফুলদানি, ব্যাগ, টি শার্ট-সহ ঘর সাজানোর নানা সামগ্রী তৈরির কৌশল রপ্ত করেছেন তাঁরা।
সে সব জিনিস নিয়েই সম্প্রতি সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের উদ্যোগে প্রদর্শনীর আয়োজন হয় সন্দেশখালিতে। পর্যটন মরসুম চলছে। ভিড় লেগে রয়েছে সুন্দরবনে। সজনেখালির এই প্রদর্শনীতেও আসেন বহু মানুষ। কেনাকাটা ভালই হয়েছে। সুপর্ণা, মধুশ্রীরা জানান, হাতের কাজ করে রোজগার হচ্ছে ভালই। আর জঙ্গলে যেতে হবে না বলে আশাবাদী তাঁরা।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন বলেন, “এই এলাকার মানুষের জঙ্গল নির্ভরতা কমাতে আমরা লাগাতার চেষ্টা করছি। গ্রামের মহিলাদের তিন মাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে হাতের কাজের। সেখানেসুন্দরবনের বাঘ, কুমির, হরিণ, কচ্ছপের ছবি দিয়ে নানা সামগ্রী ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁরা। পাশাপাশি, সুন্দরবনের নানা লোকগাথাও ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে হস্তশিল্পের মাধ্যমে।” বন দফতর সূত্রের খবর, সজনেখালিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই প্রদর্শনী। আগামী দিনে এ ধরনের আরও প্রদর্শনীর পরিকল্পনা রয়েছে বলে বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।