কুসুমবরের (নীল জামা) সঙ্গে শিবম। বসিরহাটে। —নিজস্ব চিত্র।
সুন্দরবন লাগোয়া গ্রামের এক যুবকের প্রচেষ্টায় দীর্ঘ ১৫ মাস পর বাড়ি ফিরলেন অসমের বাসিন্দা মানসিক ভারসাম্যহীন কুসুমবর দাস।
গত সোমবার সন্ধ্যায় হিঙ্গলগঞ্জের সেরেরআটি গ্রামে একটি মাঠের পাশে বসে থাকতে দেখা যায় অচেনা এক যুবককে। সে সময়ে সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন স্থানীয় এক যুবক শিবম সরকার। অচেনা যুবককে দেখে সন্দেহ হওয়ায় এগিয়ে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন শিবম। বছর পঁচিশের ওই যুবক অসমিয়া ভাষায় কথা বলতে শুরু করেন। কর্ম সূত্রে কয়েকমাস অসমে থাকায় সেখানকার ভাষা শিখেছিলেন শিবম। ফলে অচেনা যুবকের কথা তিনি বুঝতে পারেন। জানা যায়, ওই যুবকের নাম কুসুমবর দাস। তবে অসমের মরিগাও জেলায় তাঁর বাড়ি জানাতে পারলেও তাঁর অসংলগ্ন কথা শুনে শিবম বুঝতে পারে যে, ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন। শিবম তাঁকে মাঠ থেকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। চোখ-সহ শরীরের একাধিক জায়গায় চোট থাকায় চিকিৎসা করানো হয়। ওই যুবক সম্পর্কে জানার জন্য শিবম অসমে তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বন্ধুরা ওই যুবকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। শিবম ও তাঁর বন্ধুদের চেষ্টায় বাবা পরমেশ্বর, মা চন্দনা এবং ভাই মনোরঞ্জনের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন কুসুমবর। মঙ্গলবার ভাই মনোরঞ্জন ও তার এক বন্ধু ট্রেন ধরে পশ্চিমবঙ্গের দিকে রওনা দেয়। বৃহস্পতিবার তারা এসে পৌঁছয় হিঙ্গলগঞ্জের সেরেরআটি গ্রামে শিবমের বাড়িতে। ভাইকে পেয়ে খুশি মনোরঞ্জন। বলেন, ‘‘আমরা গরিব কৃষক। কসুমবর প্রথম থেকেই পড়াশোনায় ভাল। বিএ দ্বিতীয় বর্ষে পড়াকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। গত পনেরো মাস আগে এক দিন বাড়ি থেকে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোনও ফল মেলেনি। তাই দাদার আশা এক রকম ছেড়েই দিয়েছিলাম।’’ শিবমের প্রতি তাঁরা কৃতজ্ঞ থাকবেন বলে জানিয়েছেন। শিবম বলেন, ‘‘একজন অসুস্থ মানুষকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করে তাঁর ভাইয়ের হাতে তুলে দিতে পারলাম এতেই আমার আনন্দ।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।