অগ্নিদগ্ধ হয়ে মহিলার মৃত্যু, গ্রেফতার স্বামী

মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে প্রায় রোজই স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি হত। অভিযোগ, স্ত্রীকে মারধরও করত স্বামী। ২৫ সেপ্টেম্বর অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ইলা রায় (৩০) নামে ওই মহিলা। রবিবার রাতে আরজিকরে তাঁর মৃত্যু হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

অশোকনগর শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৮ ০২:১০
Share:

মৃত: ইলা রায়

মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে প্রায় রোজই স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি হত। অভিযোগ, স্ত্রীকে মারধরও করত স্বামী।

Advertisement

২৫ সেপ্টেম্বর অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ইলা রায় (৩০) নামে ওই মহিলা। রবিবার রাতে আরজিকরে তাঁর মৃত্যু হয়। অশোকনগর থানার ভাতশালা এলাকার এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর স্বামী শিবু গুপ্তকে।

ইলার বাবা সুখেন রায় অভিযোগ করেন পুলিশের কাছে। তাঁর দাবি, শ্বশুরবাড়িতে অত্যাচারে মৃত্যু হয়েছে মেয়ের। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, আরজিকরে মৃত্যুর সময় চিকিৎসকের কাছে ইলা জবানবন্দি দিয়েছেন। তা সংগ্রহ করা হচ্ছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাড়ে তিন বছর আগে অশোকনগরের কাঁকপুল রাজবংশী পাড়ার বাসিন্দা ইলার সঙ্গে বিয়ে হয় ভাতশালার শিবুর। তাঁদের আড়াই বছরের মেয়ে আছে। বিয়ের পর থেকেই অশান্তি লেগে থাকত স্বামী-স্ত্রীর। শিবু রং মিস্ত্রির কাজ করে। কিন্তু রোজগারের বেশির ভাগটাই নেশা করে টাকা উড়িয়ে দিত। অভিযোগ, ইলাকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিত শিবু। মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে মারধর করত। ঘটনার দিনও অশান্তি হয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এরপরেই অগ্নিদগ্ধ হন ইলা। তাঁকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।

মৃতার বাপের বাড়ির লোকদের দাবি, ইলার আগুনে পুড়ে যাওয়ার খবর তাঁর স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির কেউ জানাননি। অশোকনগর হাসপাতালের এক আয়া সে খবর দেন ইলার বাপের বাড়িতে।

ইলার দিদি অঞ্জনা বলেন, ‘‘খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে যাই। দেখি বোনের গোটা শরীর পুড়ে গিয়েছে। বোন আমাদের জানিয়েছিল, শিবুই গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল।’’ পরে ইলাকেপাঠানো হয়েছিল আরজিকরে।

ইলারা চার ভাইবোন। বাবা অসুস্থ। কাজকর্ম তেমন করতে পারেন না। মায়ের চোখের অস্ত্রোপচার হয়েছে। দাদার আয়ে কোনও রকমে সংসার চলে। পরিবারের দাবি, বিয়েতে তাঁরা তেমন কিছু দিতে না পারলেও পরে শিবু ও তার পরিবারের লোকজনের দাবি মতো নগদ টাকা, সোনার গয়না দেওয়া হয়েছিল। কিছু দিন আগেও শিবুকে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। ইলার মা বকুল বলেন, ‘‘গরুর দুধ বিক্রি করে টাকা জমিয়ে জামাইকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। ফের টাকা চেয়ে মেয়ের উপরে চাপ দিচ্ছিল ও।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement