স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পুনম ও তাঁর স্বামী মিঠুন দাসকে গাছের সঙ্গে বেঁধে প্রকাশ্যে মারধর করা হয়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মেয়ের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ ওঠার পর ফেসবুক লাইভে এসে বাবা, মা ও ভাইয়ের গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ডায়মন্ড হারবার থানার সুলতানপুরে। কিন্তু ঠিক কী কারণে একই পরিবারের তিন জন আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন, তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। আত্মহত্যার নেপথ্যে মেয়ের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ না কি পাড়া-প্রতিবেশীদের কাছে চূড়ান্ত অপমানিত হওয়া, ভাবাচ্ছে পুলিশকেও।
কয়েক দিন আগেই সুলতানপুরের বাসিন্দা পুনম দাসের নামে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অর্থ তছরুপের অভিযোগ ওঠে। এর পরেই শনিবার দুপুর নাগাদ পুনমের শ্বশুরবাড়িতে কিছু মহিলা চড়়াও হয়ে বিক্ষোভ দেখান। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই দিন পুনম ও তাঁর স্বামী মিঠুন দাসকে গাছের সঙ্গে বেঁধে প্রকাশ্যে মারধর করা হয়। কোমরে দড়ি পরিয়ে গ্রামে ঘোরানোও হয় তাঁদের। ওই ঘটনার ভিডিয়োও করেন পাড়া-প্রতিবেশীরা। নেটমাধ্যমেও তা ছড়িয়ে দেওয়া হয় বলে খবর।
শুধু পুনমের শ্বশুর বাড়িতেই নয়, তাঁর বাপের বাড়িতে গিয়েও বাবা শ্যামল নস্কর ও মা রীতা নস্করকে চূড়ান্ত অপমান করেন কিছু মহিলা। হুমকিও দেওয়া হয়। এর পরেই রবিবার সকাল ফ্রেজারগঞ্জ উপকূল থানার বকখালির সমুদ্র সৈকত লাগোয়া জঙ্গলের কাছে গিয়ে ফেসবুক লাইভ করে আত্মহত্যা করেন শ্যামল, রীতা ও পুনমের ছোট ভাই অভিষেক। স্থানীয়দের বক্তব্য, ফেসবুক লাইভেও সুলতানপুরবাসীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গিয়েছে অভিষেককে।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুনমের বাড়িতে এসে হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত পাঁচ মহিলাকে রবিবার আটক করা হয়েছিল, সোমবার তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম সুপর্ণা দাস, সুরভী দাস, শম্পা দাস, রীতা দাস, দেবারতি দাস। সোমবারই ধৃতদের ডায়মন্ড হারবার এসিজেএম আদালতে তোলা হয়।